ড. ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচার মামলায় বিচার শুরুর নির্দেশ
গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছে ঢাকার আদালত।
এই মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১৫ জুলাই তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।
এই মামলায় অভিযোগ গঠন ও আসামিদের অব্যাহতির আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বুধবার (১২ জুন) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেনের আদালত এই আদেশে দেন বলে টিবিএসকে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।
শুনানির সময় ড. ইউনূসসহ অভিযুক্তরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অভিযুক্তরা এই মামলার অভিযোগ থেকে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে এই মামলা থেকে অব্যাহতি চাইলে সেই আবেদন নাকচ করেন আদালত।
ড. ইউনূসসহ অন্যরা নিজেদের নিরপরাধ দাবি করেন। তাঁরা আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করতে শুনানি করেন। অন্যদিকে ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের পক্ষের তাদের আইনজীবী অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন।
এর আগে ২ জুন শুনানি শেষ করে মামলায় চার্জ গঠনের আদেশের জন্য ১২ জুন দিন ধার্য করেন আদালত। আজ অভিযোগ গঠনের আদেশ জারি করে বিচার শুরু হয়েছে।
গ্রামীণ টেলিকম কর্মচারীদের মুনাফা থেকে প্রায় ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে।
গত বছরের ৩০ মে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ এই মামলা করেন।
মামলার বিষয়ে দুদক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, গ্রামীণ টেলিকমের ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডের (ডাব্লিউপিপিএফ) অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে দুদকের কাছে অভিযোগ আসার পর দুদক আইন ও বিধি মোতাবেক অনুসন্ধান করে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যানসহ বোর্ড সদস্যদের বিরুদ্ধে 'অসৎ উদ্দেশ্যে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে পরস্পর যোগসাজশে' ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাৎ ও অর্থ পাচারের সত্যতা পায়।
অভিযোগপত্রে নাম থাকা ১৪ আসামি হলেন— গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান ও প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম।