রাসেল'স ভাইপার নিয়ে পুরস্কার ঘোষণা: পাল্টে গেল ফরিদপুরের আ. লীগ নেতার কথা
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মোঃ ইশতিয়াক আরিফ ঘোষণা করেন, রাসেল'স ভাইপার ((চন্দ্রবোড়া, বোড়া বা উলুবোড়া) কোতোয়ালী থানায় কেউ মারলেই তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। ক্ষমতাসীন দলের জেলা কার্যালয়ে এই ঘোষণার দেয়ার একদিন পরেই তিনি তার কথা ঘুরিয়ে ফেললেন।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান হয়েছে, কেউ জীবিত রাসেল'স ভাইপার ধরে নিয়ে আসলে তাকে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হবে।
বিষয়টি জেলাবাসীর মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। অনেকে বলছেন এক পলকেই আওয়ামী লীগ নেতা কথা ঘুরিয়ে ফেললেন। এর আগে তিনি যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই ঘোষণার পরেই পরের দিন শুক্রবার সকালে ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের ডাঙ্গি গ্রামে ফসলের ক্ষেতে কাজ করার সময় একটি রাসেল'স ভাইপার সাপ পিটিয়ে মারেন, ওই গ্রামের তোতা মোল্লার ছেলে মুরাদ মোল্লা (৪৫)। আগের দিন একই গ্রামের হারুন শেখের ছেলে ইউসুফ আরও একটি রাসেল ভাইপার সাপ পিটিয়ে মেরে ফেলেছে বলে জানা যায়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়ার আগেই প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগ তাদের অবস্থান পরিষ্কার করল। এ যেন এক পলকে কথা ঘুরিয়ে ফেললেন আওয়ামী লীগ নেতা।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ জানিয়েছেন, "হয়তো বিষয়টি বলার ভুল কিংবা বোঝার ভুল হতে পারে। বিষধর হলেও এসব সাপ পরিবেশের বাস্তুসংস্থানের একটি অংশ। কিন্তু বর্তমানে ফরিদপুরের চরের মানুষেরা ভীষণ আতঙ্কগ্রস্ত এনিয়ে। এজন্যই আমরা সবাইকে সতর্ক হতে এ ঘোষণা দিয়েছি। তবে সাপ মারা যাবে না, জীবিত অবস্থায় ধরতে পারলে তাকে পুরস্কার দেওয়া হবে।"
ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভুঁইয়া জানান, "যেকোনো বন্যপ্রাণী নিধন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। রাসেল'স ভাইপার এ দেশ থেকে বিলুপ্ত হওয়ার পরে– ২০১৪ সাল থেকে আবার সাপটির দেখা যাচ্ছে। পুরস্কারের এ ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কেউ যদি রাসেল'স ভাইপার সাপ ধরতে অথবা মারতে গিয়ে সাপের কামড়ে মারা যায়, তবে এ দায় কে নেবে?"