হাজারীবাগ থেকে সরে এসে ট্যানারি এখন সাভারের নদী দূষণ করছে: উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি সরিয়ে নেওয়ার পর ট্যানারিগুলো এখন সাভারের নদী দূষণ করছে।
'হাজারীবাগ থেকে যে ট্যানারি আমরা সাভারে নিয়ে গেলাম অনেক যুদ্ধ করে; কিন্তু সাভারে ট্যানারি ফ্লারিশ [উৎকর্ষ] করল না কেন? যে-সব কারণে ট্যানারি হাজারীবাগ থেকে সাভারে নেওয়া হয়েছে, সে কারণগুলো সেখানেও [সাভারে] ঘটছে। সাভারে যে নদীগুলো প্রবাহিত হয়েছে, সে নদীগুলো তো দূষণযুক্ত করে দিচ্ছে, দূষণমুক্ত নয়,' বলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত 'মেকিং সিটিজ সাসটেইনেবল: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড ইমপ্যারেটিভিস ফর বাংলাদেশ' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
সেমিনারে বিআইআইএসএস-এর গবেষণা পরিচালক ড. সেগুফতা হোসেন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এরপর প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
মন্ত্রী বলেন, নগরায়নের জন্য কেবল ভবন নির্মাণ, সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো আর জীবন-জীবিকার কথা চিন্তা করলেই হবে না, প্রাকৃতিক প্রবৃদ্ধির বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, 'আমরা নগরায়নের নামে বুড়িগঙ্গাকে শেষ করে দিয়েছি। শুধু বুড়িগঙ্গা নয়, টোটাল ওয়াটার সিস্টেমটা আজকে ধ্বংস হয়ে গেছে।
'এটাকে কীভাবে উদ্ধার করা যায়, সেটাও নগরায়নের পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। বর্জ্যব্যবস্থাপনার চিন্তা কঠিনভাবে করতে হবে। আর প্রতিদিন কৃষিজমি যে পরিমাণে নগরায়নের কবলে নষ্ট হচ্ছে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।'
মন্ত্রী বলেন, 'ঢাকাই বাংলাদেশ নয়। ঢাকার বাইরেও বাংলাদেশ আছে, এটা আমরা বুঝতে চাই না। এমনকি দূর গ্রামের বাসিন্দারাও ঢাকায় চলে আসতে চান।'
ড. সেগুফতা হোসেন বলেন, বিশ্বব্যাপী অনেক অঞ্চলে টেকসই নগরায়ন অগ্রাধিকার হয়ে দাঁড়িয়েছে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশও নগরায়নের ফলে যানজট, জলাবদ্ধতা, মাটি-পানি-বায়ু দূষণ, ভূমিকম্পের ঝুঁকি ইত্যাদি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
ইতোমধ্যে ৪০ শতাংশ মানুষ শহরে বাস করে উল্লেখ করে প্যানেল আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজ (সিইউএস)-এর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, 'বাংলাদেশকে একেবারেই রুরাল [গ্রামীণ] বলার অবকাশ কম। আমদের পুরো নগরায়ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করতে হবে।'
কিন্তু এর জন্য ন্যাশনাল আরবান পলিসি দরকার বলে জানান তিনি। '২০১১ সালে আমার নেতৃত্বে একটি দল এ নীতিমালা তৈরির প্রাথমিক কাজ করেছিল। কিন্তু আজ ২০২৪ সালেও কোনো কারণে সেটি চূড়ান্ত করা হয়নি।'