অবশেষে জনসমক্ষে এলেন এনবিআর কর্মকর্তা মতিউরের প্রথম স্ত্রী লাকী
অবশেষে জনসমক্ষে এলেন আলোচিত সমালোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমানের স্ত্রী ও নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকী।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে প্রথমে উপজেলা পরিষদে, এরপর আসন্ন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রস্ততি সভায় যোগ দেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইকবাল হাসান সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় রায়পুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রায় শতাধিক নেতা-কর্মী এবং বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।এছাড়াও, ওই উপজেলার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষকরাও সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি লাকী।
সর্বশেষ ঈদুল আজহার দুই দিন আগে অফিসে এসেছিলেন লাকী। এরপর টানা দুই সপ্তাহ তিনি জনসমক্ষে আসেননি এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
প্রসঙ্গত, এবারের ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য '১৫ লাখ' টাকা দিয়ে একটি ছাগল কেনার ঘোষণা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিলেন মুশফিকুর রহমান ইফাত নামে এক তরুণ।
ফেসবুকে আলোচিত এই ছাগলের খবর ঘাটতে গিয়ে একে একে বেরিয়ে আসে বিস্ময়কর সব তথ্য! ১৫ লাখ টাকার ছাগল কেনা ইফাতের বাবা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউর রহমান, যিনি শুরুতে ইফাতকে নিজের ছেলে হিসেবে পরিচয় দিতেই অস্বীকৃতি জানান।
এরপর থেকে মতিউর ও তার পরিবার সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। ছেলে ইফাত ৭০ লাখ টাকা দিয়ে একটি গরু কিনেছে বলেও জানা যায়।
এই ঘটনার পর তিনি এনবিআরের পদ হারিয়েছেন, সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকেও তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তার সম্পদের অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মতিউর, তার দুই স্ত্রী ও সন্তান এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
এছাড়া, মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের বেনিফিশিয়ারি ওনার অ্যাকাউন্ট (বিও হিসাব) জব্দ করতে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডকে নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
লাকী মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী। মতিউরের দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে ছাগল কিনতে যাওয়ার পর আলোচনায় আসেন মতিউরের প্রথম স্ত্রী লাকী এবং তার বিপুল সম্পদও।
মাত্র দুই বছর আগেও রায়পুরার রাজনৈতিক দৃশ্যপটে সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক লায়লা কানিজ লাকী ছিলেন অপরিচিত এক নাম।
কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা তো দূরের কথা, তিনি কোনো সাধারণ কর্মীও ছিলেন না। কিন্তু সেই লাকীই এখন উপজেলা চেয়ারম্যান।