কোটা: শাহবাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ১ ঘণ্টার অবরোধ শেষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে শাহবাগে এক ঘণ্টা অবরোধ পালন করেছেন।
মঙ্গলবার (২ জুন) দুপুর আড়াইটা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সমবেত হয়। পরে সেখান থেকে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিভিন্ন আবাসিক হল প্রদক্ষিণ করে নীলক্ষেত যায়।
সেখান থেকে ঢাকা কলেজ ও নিউ এলিফ্যান্ট রোড হয়ে শাহবাগে পৌঁছে সড়ক অবরোধ করে। বেলা ৩টা ৪৫ মিনিটে অবরোধ শুরু হয়ে চলে ৪টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আব্দুল কাদির বলেন, '৪ দফা দাবিতে আমাদের এই আন্দোলন আগামী ৪ জুলাই হাইকোর্টের শুনানি পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ছাত্রসমাজ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রোদ-বৃষ্টি সকল কিছু উপেক্ষা করে নায্য আন্দোলন জারি রাখবে।'
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের আরেক ছাত্র আবু মুসা বলেন, 'সাধারণ ছাত্রদের সাথে এই বৈষম্য স্বাধীনতা পূর্ব শোষণ নিপীড়নের কথা মনে করিয়ে দেয়। মেধাবীদের একটি রাষ্ট্র এইভাবে বঞ্চিত করলে উন্নয়ন ও সুশাসনের পথে বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে।'
অন্যদিকে বিকাল ৪টায় একই দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন।
শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে রয়েছে: ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে)।
এছাড়া সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।
অবরোধের সময় অর্ধশতাধিক পুলিশ ও ডিবি সদস্য মাথায় হেলমেট ও হাতে লাঠি ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে উপস্থিত ছিল।
এর আগে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত ছিল। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ বরাদ্দ ছিল। পরে শিক্ষার্থীদের একটি অংশের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করে মন্ত্রিসভা। পরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংশোধন করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
তবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে কোটা ব্যবস্থা বহাল রাখে সরকার।