সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায় স্থগিত হয়নি
সরকারি বিভিন্ন দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণার রায় স্থগিত হয়নি।
আজ (৪ জুলাই) রিট আবেদনকারীপক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ 'আজ নয়' বলে আদেশ দিয়েছেন।
এ সময় পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর কোটা নিয়ে নিয়মিত আপিল করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে রাজপথে আন্দোলন করে সুপ্রিম কোর্টের রায় পরিবর্তন করা যায় কিনা— এমন প্রশ্নও তোলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এবং রিটের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু।
আপিল বিভাগের পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু।
২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পরিপত্র জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনকে চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন ২০২১ সালে হাইকোর্টে রিট করেন।
এ সময় রিট আবেদনকারীরা বলেছিলেন, ৯ম গ্রেড এবং ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেডের জন্য ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বিলুপ্ত করে ১৪ থেকে ২০তম গ্রেডে রাখা হয়েছে, যা মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে অপমান করার শামিল।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এর রুলে ঐ পরিপত্র কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না— সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়।
পরবর্তীতে গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে) মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। বলা হয়, সরকারি চাকরিতে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনরায় বহাল থাকবে।
মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াত সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়ার পর থেকেই সেটি সমালোচনার শিকার হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের একাধিক স্থানে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে রায় স্থগিত চেয়ে ৯ জুন আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
এর আগে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত ছিল। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ বরাদ্দ ছিল।