মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে আপিল বিভাগে শুনানি বুধবার
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে শুনানির জন্য দিন ধার্য হয়েছে আগামীকাল বুধবার (১০ জুলাই)।
আজ মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম শুনানির জন্য এই দিন ধার্য করেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক।
তিনি টিবিএসকে জানান, "প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন চেম্বার আদালত।"
শুধু এই মামলার শুনানির দিন ধার্যের জন্যই বেলা সাড়ে ১১টায় চেম্বার বিচারপতির আদালত বসেছিলেন।
কোটা নিয়ে রিটকারী পক্ষ নতুন আইনজীবী নিয়োগ করে বিশেষ চেম্বার আদালতে শুনানির আবেদন করে। পরে চেম্বার বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম আগামীকাল শুনানির দিন ধার্য করেন। যেহেতু এখনও পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পায়নি, সে হিসেবে বিশেষভাবে চেম্বার আদালত এ আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পরিপত্র জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনকে চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন ২০২১ সালে হাইকোর্টে রিট করেন।
এ সময় রিট আবেদনকারীরা বলেছিলেন, ৯ম গ্রেড এবং ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেডের জন্য ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বিলুপ্ত করে ১৪ থেকে ২০তম গ্রেডে রাখা হয়েছে, যা মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে অপমান করার শামিল।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এর রুলে ঐ পরিপত্র কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না— সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়।
পরবর্তীতে গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে) মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। বলা হয়, সরকারি চাকরিতে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনরায় বহাল থাকবে।
মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াত সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়ার পর থেকেই সেটি সমালোচনার শিকার হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের একাধিক স্থানে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে রায় স্থগিত চেয়ে ৯ জুন আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
এর আগে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত ছিল। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ বরাদ্দ ছিল।