পুলিশকে মারধর, যানবাহনের ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগে কোটা আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা
কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে পুলিশের যানবাহন ভাঙচুর, হামলা এবং পুলিশ সদস্যদের মারধর করার অভিযোগ এনে শাহবাগ থানায় বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের পরিবহন বিভাগের গাড়িচালক খলিলুর রহমান গতকাল শুক্রবার রাতে বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন। মামলায় আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়– 'অজ্ঞাতপরিচয় অনেক শিক্ষার্থী'কে।
মামলায় এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১১ জুলাই কোটা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্ব ঘোষিত আন্দোলনের কর্মসূচি ছিল। সে অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে অজ্ঞাতপরিচয় ছাত্ররা জড়ো হয়ে বিভিন্ন হলের সামনে দিয়ে প্রদক্ষিণ করে বিকেল ৪টার সময় স্লোগান দিতে দিতে শাহবাগ মোড়ের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অতিক্রম করে বেআইনি জনতায় আবদ্ধ হয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করেন। তারা শাহবাগ মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন ও পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করেন। এসময় কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের মারধর করে সাধারণ জখম করেন।
এরপর আন্দোলনকারীরা হোটেল ইনটারকন্টিনেন্টালের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে– ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা ছাত্রদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু, তাতে গ্রাহ্য না করে অনেক শিক্ষার্থী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলের পাশে "নিরাপদ স্থানে রাখা পুলিশের একটি এপিসি (সাঁজোয়া যান) ও জলকামানের গাড়ির ওপর উঠে উদ্দাম নৃত্য শুরু করে।" এসময় তারা জলকামান গাড়ির গতিরোধ করে এবং চালককে জোরপূর্বক বের করার চেষ্টা করে।
কিন্তু, শিক্ষার্থীরা এ দুটি যানের ওপর চড়ে নাচানাচি করায় এপিসির দুটি এসএস স্ট্যান্ড, বনেট, বাম পাশের রেডিও অ্যান্টেনা, ডান পাশের পেছনের চাকার মাডগার্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শিক্ষার্থীরা জলকামানের গাড়িরও বাম পাশের লুকিং গ্লাস ভেঙে ফেলে। এতে পাঁচ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
মামলার বাদীর আরও অভিযোগ, পরে পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে যানবাহনগুলো থেকে নামিয়ে আনতে সমর্থ্য হন। কিন্তু এতে তারা আরও ক্ষুদ্ধ হয়ে পুলিশের দিকে পানির বোতল, টেপটেনিস ও ইটের টুকরো ছুড়ে মারে। এতে অনেক পুলিশ সদস্য আঘাতপ্রাপ্ত হন। এসময় উপস্থিত পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তারা অত্যন্ত ধৈর্য্যের সাথে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন।
ছাত্ররা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা এবং শাহবাগ থানায় ছাত্রদের ধরে নিয়ে গেছে বলে গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে পুলিশকে মারতে তেড়ে আসেন ও পুলিশকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে শাহবাগ মোড় ত্যাগ করেন।
বিবাদীরা বেআইনিভাবে জড়ো হয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে সরকারি কাজে বাধা দেন। তারা স্বেচ্ছায় আঘাত করেন, গতিরোধ, দাঙ্গা দমনকারী কর্তব্যরতদের প্রতি আক্রমণ ও বাধা দিয়ে ক্ষতিসাধন ও ভয়ভীতি দেখান বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।