জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের জন্য কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দায়ী করল পুলিশ
ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রাঙ্গণে অবস্থান কর্মসূচি পালনের সময় সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গোটা ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হলেও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টির জন্য কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদেরই দায়ী করেছে পুলিশ।
রাত ২টার দিকে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে আশুলিয়া থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. দিপু বলেন, "জাবি ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা হয়েছে। আমাদের এসপি-ওসিসহ সবাই ওখানে আছেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ঝামেলা সৃষ্টি করছেন।"
এর আগে রাত ১১টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের কথিত সদস্যরা। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একপর্যায়ে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দিনের কর্মসূচি শেষ করার কয়েক ঘণ্টা পরই এ ঘটনা ঘটে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে হামলায় সোমবার সারাদেশে ৩২০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এছাড়া দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও ছাত্রলীগের হামলার খবর পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের তালা ভেঙে ভেতরে আশ্রয় নেন। প্রায় ১৫ মিনিট পর অন্তত ৩০০ ছাত্রলীগ কর্মী জিআই পাইপ ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ভিসির বাসার সামনে আসে। তারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দিকে ইটপাটকেল ও কাচের বোতল নিক্ষেপ করতে থাকে।
এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে দুপক্ষই পালটাপালটি অবস্থান নিয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, হামলাকারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অধিকাংশই বহিরাগত। তাদের মধ্যে চল্লিশোর্ধ্ব লোকও রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। শিক্ষার্থীদের দাবি, ওই এলাকায় গুলি চালানো হয়েছে।
মুঠোফোনে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী টিবিএসকে বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রথমে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় বহিরাগতসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করতে উদ্যত হলে তারা (আন্দোলনকারীরা) তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। কিন্তু অনেকেই ভেতরে ঢুকতে পারেননি।
পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে ছাত্রলীগ হামলা করা থেকে বিরত থাকে বলে জানান ওই শিক্ষার্থী।
রাত ১টার দিকে উপাচার্যের বাসার সামনে মাঠে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।