বৃষ্টি উপেক্ষা করে চট্টগ্রামজুড়ে সাড়ে ৩ ঘণ্টার বিক্ষোভ, পুলিশ বক্স ভাঙচুর
টানা ভারী বৃষ্টিপাত উপেক্ষা চট্টগ্রামে নগরীর প্রধান সড়কগুলো প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা ধরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এসময় একটি ট্রাফিক পুলিশ বক্স ভাঙচুর করেন আন্দোলনকারীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষিত 'প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল' কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুর পৌনে ২টার দিকে নগরীর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের সামনে থেকে তারা মিছিল শুরু করা হয়।
মিছিলটি নগরীর লালদিঘী, কোতোয়ালী, নিউমার্কেট, টাইগারপাস, লালখানবাজার ওয়াসা মোড়, দামপাড়া, জিইসি, দুই নম্বর গেট, মুরাদপুর হয়ে বহাদ্দারহাটে যায়। সেখানেই বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে কর্মসূচি সমাপ্ত হয়।
পথিমধ্যে নিউমার্কেট, টাইগারপাস ও বহাদ্দারহাট মোড়ে বেশ কয়েক দফা অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন আন্দোলনকারীরা। তখন যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স চলাচলের জন্য সড়ক উন্মুক্ত করা হয়েছিল।
এসময় মসজিদের মুসল্লি, অভিভাবকসহ নানা বয়সী মানুষকে কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যায়। বৃষ্টি শুরু হলে সড়কের আশপাশের দোকানীরা শিক্ষার্থীদের পলিথিন দিয়ে সহযোগিতা করতে দেখা গেছে।
এছাড়া অনেক মানুষ পানি, কলা, কেক, পাউরুটি দিয়েও সহযোগিতা করেন শিক্ষার্থীদের।
আন্দোলনকারীরা জানান, দেশব্যাপী শিক্ষার্থী-জনতা, শিশু হত্যার বিচারের দাবিতে তারা আন্দোলনে নেমেছেন। বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরবেন না।
কর্মসূচি চলাকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি জোন) অতনু চক্রবর্তী আন্দরকিল্লা মোড়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, 'পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। দুই শতাধিক পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে।'
ট্রাফিক পুলিশ বক্স ভাঙচুর
বিক্ষোভ মিছিল শুরুর স্থান আন্দরকিল্লা মোড়ে দুই শতাধিক পুলিশ সদস্য অবস্থান করছিল। বিকাল পৌনে ৪টার দিকে শিক্ষার্থীদের মিছিলটি নগরীর ওয়াসা মোড়ে পৌঁছালে পুলিশের সঙ্গে কয়েক মিনিটের জন্য উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
এসময় জমিউতুল ফালাহ মসজিদের সামনে থাকা পুলিশের একটি সাজোয়া যান শিক্ষার্থীদের দিকে এগিয়ে আসতে চাইলে ফের উত্তেজনা শুরু হয়। শিক্ষার্থীর ওয়াসা মোড়ের একটি ট্রাফিক পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে। এছাড়া পুলিশের সাজোয়া যান লক্ষ্য করেও ইট-পাটকেল ছুড়ে।
সিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (টিবিএস)-কে বলেন, 'আন্দোলনকারীরা একটি ট্রাফিক পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে। তবে সেখানে কোনো পুলিশ সদস্য ছিলেন না। এছাড়া মিছিলটি সিএমপির কার্যালয়ে যাওয়ার সময় সিএমপির মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের নামফলকটিও ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।'
তিনি আরও বলেন, 'মাঠে থাকা আামদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ধারণা করছি, আন্দোলন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছেন।'