চট্টগ্রাম কেইপিজেডে হাতির আক্রমণে কোরিয়ান বিনিয়োগকারী গুরুতর আহত
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে (কেইপিজেড) হাতির আক্রমণে দায়ে হিউন ক্যাং নামে এক কোরিয়ান বিনিয়োগকারী আহত হয়েছেন।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে অ্যাপোলো ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
কেইপিজেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মুশফিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'ক্যাং গলফ খেলতে কেইপিজেডে গিয়েছিলেন। খেলা শেষে গলফ কোর্সে হাঁটছিলেন, এমন সময় হঠাৎ করে একটি হাতি কাছের বন থেকে এসে তাকে আক্রমণ করে বসে। এরপর নিরাপত্তা কর্মীরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, তার পাঁজরের চারটি হাড় ভেঙ্গেছে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত রয়েছে। অবস্থা এখনও গুরুতর'।
কেপিজেডের কর্মীদের জন্য বন্য হাতি একটি বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেপিজেডের ম্যানেজার মুশফিকুর রহমান বলেন, সবসময় একটা ভয়ের মধ্যে থাকা লাগে। কারণ আগে থেকে বলা যায় না হাতিগুলো কোন দিক থেকে আসবে। গত পাঁচ বছরে, হাতিরা কেইপিজেডের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে, হাজার হাজার গাছ নষ্ট করেছে।
হাতিগুলোর স্থানান্তরের জন্য কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ সরকারের সাথে বারবার যোগাযোগ করেছে এবং তাদের পূর্ণ সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানান তিনি।
কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এলাকাটি ঐতিহাসিকভাবে বালির ঢিবি ছিল। কেইপিজেডের প্রকৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগের ফলে হাতির পালসহ আরও অনেক স্তন্যপায়ী প্রাণী এই জায়গায় বসবাসের জন্য আকৃষ্ট হয়। বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করে বন দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও, তারা এসব হাতি স্থানান্তরে কোনো আগ্রহ দেখায়নি।
চট্টগ্রাম বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা দীপান্নিতা ভট্টাচার্য বলেন, আনোয়ারা এবং কর্ণফুলির বনাঞ্চলে চারটি হাতির একটি দল বাস করে। এই হাতিগুলো প্রায়শই স্থানীয় এলাকায় চলে আসে। এতে ফসল এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং স্থানীয় বাসিন্দারা আহত হন। বন বিভাগ থেকে প্রায়ই এসব আক্রমণের ক্ষতিপূরণ দেয়া হয় বলে জানান তিনি।
চলমান সমস্যা সমাধানের জন্য বন বিভাগ হাতি প্রতিরোধ এবং আক্রমণ এড়াতে কেপিজের নিরাপত্তা কর্মীদের জন্য বেশ কয়েকটি সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
বন বিভাগের কর্মকর্তা দীপান্নিতা ভট্টাচার্যের মতে, সমস্যা সমাধানে বিকল্প পন্থা অবলম্বন করা উচিত, যেমন হাতিদের জন্য বনে পর্যাপ্ত খাদ্যের ব্যবস্থা করা, যাতে তারা বাইরে আসতে বাধ্য না হয়।