আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল: খুলেছে অধিকাংশ পোশাক কারখানা, ফিরছে গতি
টানা দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় যাবত আশুলিয়ায় চলমান শ্রমিক অসন্তোষের জেরে বেশ কিছু পোশাক কারখানা বন্ধ থাকার পর আজ সপ্তাহের প্রথম দিনে বিজিএমইএর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আশুলিয়ার অধিকাংশ পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে।
সকাল থেকে এসব কারখানায় স্বাভাবিকভাবে কাজ শুরু করেছেন শ্রমিকরা, ফিরতে শুরু করেছে শিল্পের স্বাভাবিক গতি।
সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রথম দুই ঘণ্টায় শিল্পাঞ্চলের কোথাও কোনো শ্রমিক অসন্তোষের খবর পাওয়া যায়নি।
শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অতি শীঘ্রই এই শিল্পের স্বাভাবিক গতি আবারও পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দুপুর পর্যন্ত পরিস্থিতি এমন স্বাভাবিক থাকলে আগামীকাল থেকে শিল্পাঞ্চলের কর্মপরিবেশ পূর্বের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তারা।
শিল্প পুলিশের একটি সূত্র জানায়, অল্প সংখ্যক কারখানা ছাড়া অধিকাংশ পোশাক কারখানা আজ খুলে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকরাও শান্তিপূর্ণভাবে কারখানাগুলোতে কাজ শুরু করেছেন।
তবে গতকাল ঢাকার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে স্থানীয় নেতা ও কারখানা মালিকদের সাথে বৈঠকের পর বিজিএমইএ'র পক্ষ থেকে আজ সকলে কারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এখনো বন্ধ রাখা হয়েছে কিছু কারখানা।
শিল্প পুলিশ সূত্র জানায়, অধিকাংশ বড় কারখানাগুলো খুলে দেওয়া হলেও কিছু কারখানা আজও বন্ধ রাখা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, পরিস্থিতি বুঝতে কারখানাগুলো বন্ধ রেখেছে মালিকপক্ষ।
এর মধ্যে বাংলাদেশের শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩ (১) ধারায় বন্ধ রয়েছে ৩৬টি কারখানা এবং সাধারণ ছুটি রয়েছে ১৩টি কারখানায়।
বিষয়টি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, "আজ ১৩ (১) ধারায় ৩৬টি এবং ১৩টি কারখানায় সাধারণ ছুটি রয়েছে। এর বাইরে সব কারখানা চলমান, এখন পর্যন্ত পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে।"
শিল্পাঞ্চলের শ্রমিক নেতারা বলছেন, সকাল থেকে তারাও কোথাও কোনো শ্রমিক অসন্তোষের খবর পাননি। শ্রমিকরা কাজে ফিরতে আগ্রহী, এবং তারা আশা করছেন আজ যেসব কারখানা বন্ধ রয়েছে, সেগুলো আগামীকাল থেকে খুলে দেওয়া হবে।
এদিকে, বিজিএমইএ সূত্র জানায়, আজ বেলা ১২টা পর্যন্ত তাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী- আজ ৩৬টি কারখানা বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩ (১) (নো ওয়ার্ক, নো পে) ধারায় বন্ধ রয়েছে। স্ব-বেতনে (লিভ উইথ পে) ছুটি রয়েছে দুটি কারখানা। কারখানা খোলা রাখার পর কাজ বন্ধ আছে ৪টিতে।
এছাড়া, সারাদেশে বিজিএমইএর মোট ২১৪৪টি চালু কারখানার মধ্যে খোলা রয়েছে ২,১০২টি (৯৮.০৪ শতাংশ) কারখানা।
আগস্ট মাসের বেতন পরিশোধ করেছে ১,৮৯৪টি কারখানা।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, পরিস্থিতি আজ বেশ উন্নতই মনে হচ্ছে। অধিকাংশ কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে; অনেক কারখানার সামনে শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি মেনে নিয়ে সেই অনুযায়ী মালিকপক্ষ নোটিশ দিয়েছে।
"শ্রমিকরাও কাজে ফিরতে আগ্রহী, আমরা আশা করবো, পরিস্থিতি কাল থেকে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে আসবে এবং যেসব কারখানা আজ বন্ধ রয়েছে, সেগুলোও আগামীকাল থেকে খুলে দেওয়া হবে," যোগ করেন তিনি।