গণপিটুনিতে হত্যা: জড়িতদের বিচার চেয়ে শাহবাগে মশাল মিছিল
বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ এবং ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের নেতা-কর্মীরা। আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে মশাল মিছিল ও সমাবেশ থেকে তারা এ দাবি জানান।
মশাল মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, গতকাল ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুজনকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক যুবদল নেতা সাইদুল ইসলাম হেফাজতে মারা গেছেন। আমরা এসব হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
তারা বলেন, ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার শাসনামলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড একটি সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছিল। সেই হাসিনার পতন বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে হয়েছে। গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের মানুষের মাঝে যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি করেছে তাতে প্রত্যেক নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করা প্রাথমিক কর্তব্য বলে মনে করে। আমরা অবিলম্বে অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে বিচারবহির্ভূত এসকল হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করি। একইসাথে মৌলিক মানবাধিকার পরিপন্থী যেসকল আইন তা অবিলম্বে বাতিল করার দাবি জানাই।
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন লেখক ও নৃবিজ্ঞানী রেহনুমা আহমেদ, শিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ শায়ান, সমগীত সাংস্কৃতিক প্রাঙ্গনের সংগঠন জিহাদ হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড প্রমুখ।
মশাল মিছিলে সংহতি জানিয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, সাংবাদিক সাইয়েদা গুলরুখ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।
হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ শিক্ষকের বিবৃতি
এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ শিক্ষক। সেইসঙ্গে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের বিচারসহ চারটি দাবি জানিয়েছেন তারা।
দাবিগুলো হলো- হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে অবিলম্বে বহিষ্কার করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় আইনে সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করতে হবে, প্রক্টরের জিম্মায় থাকা সত্ত্বেও প্রহৃত হওয়ার এ ঘটনার দায় প্রক্টরিয়াল টিমকে নিতে হবে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের কর্তৃত্ববাদীতার অবসান ঘটাতে প্রশাসনিক উদ্যোগ নিতে হবে এবং গত ১৫ ও ১৭ জুলাই ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর সশস্ত্র হামলায় মদদদাতা ও হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী শিক্ষকরা হলেন- নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাইদ ফেরদৌস, অধ্যাপক মানস চৌধুরী, অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক খন্দকার নেহাল মুনিম, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া, অধ্যাপক রায়হান রাইন, অধ্যাপক মাহমুদা আকন্দ, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলি প্রমুখ।