সরকারের সঙ্গে সংলাপে নির্বাচনের আয়োজন, রোডম্যাপে গুরুত্ব দেবে বিএনপি
শনিবার (৫ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর তৃতীয় দফা সংলাপে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবে বিএনপি। দলীয় সূত্র এমনটিই জানিয়েছে।
সংস্কারের উদ্দেশ্যে ৬ কমিশন নিয়ে আজ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করবেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সংলাপে বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আয়োজন, রোডম্যাপ, দিনক্ষণ ইত্যাদি বিষয় সবচেয়ে গুরুত্ব পাবে বলে জানা গেছে।
বিএনপি সূত্র জানায়, দলটি চাচ্ছে আগামী ১ থেকে দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে দেওয়া হোক। কোনোভাবেই এরচেয়ে বেশি সময় দিতে চাচ্ছে না দলটি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, "সংলাপে মূলত রাষ্ট্র পরিচালনা এবং নির্বাচনী রোডম্যাপ ইস্যুতে বক্তব্য থাকবে বিএনপির।"
দেশ-জনগণ এবং দল ও রাষ্ট্র পরিচালনার স্বার্থে বিএনপির নির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবনা, বিভিন্ন সংস্কারের বিষয়েও প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা টিবিএসকে জানান, নির্বাচন বেশি দেরি হলে বাংলাদেশে বিদেশি শক্তির মদদে আরেকটি ওয়ান ইলেভেন ঘটার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
আজ শনিবার বেলা আড়াইটায় বিএনপির সাথে বৈঠক দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করবেন প্রধান উপদেষ্টা। বিকাল তিনটায় জামায়াতে ইসলামী, বিকাল সাড়ে তিনটায় গণতন্ত্র মঞ্চ এবং বিকাল চারটায় বাম গণতান্ত্রিক জোট, বিকালে সাড়ে চারটায় হেফাজতে ইসলাম, পাঁচটায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং সাড়ে ৫টায় এবি (আমার বাংলাদেশ) পার্টির সঙ্গে সংলাপ করবে সরকার।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, "অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আমাদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, আমরা যাব। এই মুহূর্তে এরচেয়ে বেশি কিছু বলার নেই।"
দায়িত্ব গ্রহণের পর এর আগে দুই দফা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এটি তৃতীয় দফা সংলাপ।
সংস্কার ও নির্বাচনকে সমান গুরুত্ব দিচ্ছে জামায়াত
জামায়াতে ইসলামী সূত্র জানায়, দলটিও চাচ্ছে দেড় থেকে ২ বছরের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া হোক। তবে তার আগে খুবই দ্রুততা ও দক্ষতার সাথে রাষ্ট্র সংস্কারটিও সম্পন্ন করতে হবে। সংস্কার করতে গিয়ে অতিরিক্ত সময় যেন না নেওয়া হয়, সেটিও মাথায় রাখছে দলটি।
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ টিবিএসকে বলেন, "সংস্কারের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। কেননা রাজনৈতিক দলগুলোই হচ্ছে প্রধান অংশীজন। তাদের মতামত নিয়ে এগোলে সংস্কারের প্রক্রিয়া আরও ভালো হবে। তবে জামায়াতে ইসলাম নির্বাচনকে সবচেয়ে বেশি প্রধান্য দিচ্ছে।"
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলন, "আমরা জানতে চাইবো যে, সরকার তো সংস্কার কমিশন করেছে অনেকদিন হয়ে গেল; কিন্তু প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। কমিশন ১ অক্টোবর থেকে কাজ শুরুর কথা থাকলেও সেটি পারেনি। কমিশনের কাজ কী হবে?"
"অন্তর্বর্তী সরকার তার রাজনৈতিক জার্নিটা কোথায়–কীভাবে শেষ করবেন একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে, সে বিষয়ে জানার আগ্রহ থাকবে। আমরা নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে কথা বলব। কেননা এখন নির্বাচন কমিশন নেই। সেটি কীভাবে গঠন করা যায়, সে বিষয়েও কথা বলব। প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার বিষয়েও কথা বলব। যদিও এসব সময়সাপেক্ষ ব্যাপার," যোগ করেন তিনি।
এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বাভাবিক করা, ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণসহ পুলিশ বাহিনীর সংস্কারের বিষয়েও আলোচনা হতে পারে বলে জানান সাইফুল হক।