অবৈধ সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ব্যবস্থা: আসিফ মাহমুদ
শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ আজ (১৫ অক্টোবর) বলেছেন, কোনো কর্পোরেট কোম্পানি ইচ্ছাকৃতভাবে বাজারে সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত থাকলে সেগুলোর বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত সেক্রেটারিয়েট মিডিয়া সেন্টারে এক মতবিনিময় সভায় তিনি আরও বলেন, "সরকার এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।"
এই পদক্ষেপ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, "আমাদের কাছে পরিকল্পিতভাবে সিন্ডিকেট তৈরি করা ব্যক্তি ও কর্পোরেট কোম্পানির তথ্য রয়েছে। আমরা বিশেষ ক্ষমতা আইনের আওতায় তাদের গ্রেপ্তার করব।"
চাঁদাবাজি সিন্ডিকেট সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, "আগে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সিন্ডিকেট ছিল। তবে ব্যবসায়ীরাও এর অংশ ছিলেন এবং এখনও রয়েছেন। তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ বজায় রাখতে তারা কিছু রাজনীতিবিদদের সঙ্গে মিলে সিন্ডিকেট করছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি।"
তিনি আরও জানান, কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করার প্রক্রিয়া চলছে।
"কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে সমস্যা হলো, একজন গ্রেপ্তার হলে তার স্থানে আরেকজন আসে। আমরা সিন্ডিকেটের মূল ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি এবং এই প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন," তিনি বলেন।
সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত
অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার একের পর এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে।
তিনি বলেন, "দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। বন্যার কারণে অনেক ফসল নষ্ট হয়েছে, যার ফলে সবজির দাম বেড়েছে। তবে অন্যান্য অনেক পণ্যের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের বড় প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে।"
সরকার সিন্ডিকেট ভাঙতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে আসিফ বলেন, আগের সরকার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার অন্যান্য উপায় দুর্বল করায় পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, "কর্পোরেশনগুলোর সাথে আগের সরকারের যোগসাজশ এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে অভিযান চলছে বলা হলেও, অভিযানে মাত্র ৩,০০০-৫,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়, যা মোটেও কার্যকর নয়।"
আসিফ আরও বলেন, পূর্বে আইন অনুযায়ী কর্পোরেশনকে কারাগারে পাঠানোর সুযোগ ছিল, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে।
তিনি বলেন, "এটি ঠিক করতে সময় লাগবে। আইনের আরও কঠোর হওয়া দরকার। তবে তার আগে আমরা আরও কঠোর পন্থা অবলম্বনের কথা ভাবছি।"