১২ টাকায় বিক্রি নিশ্চিতে দুই আড়তে দৈনিক ২০ লাখ ডিম সরবরাহ করবে কর্পোরেট উৎপাদকরা
ঢাকার বাজারে খুচরায় সরকার নির্ধারিত দামের মধ্যে ডিম বিক্রি নিশ্চিত করতে তেজগাঁও ও কাপ্তান বাজারের ডিমের আড়তে প্রতিদিন ২০ লাখ ডিম সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কর্পোরেট উৎপাদনকারীরা।
পোলট্রিখাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন— বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ কো-অর্ডিনেশন কমিটি (বিপিআইসিসি) সূত্রে জানা যায়, আজ থেকে প্রতিদিন তেজগাঁও ও কাপ্তান বাজারে ২০ লাখ করে ডিম সরবরাহ করবে এখাতের কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। আড়তে প্রতিটি ডিম বিক্রি করা হবে ১০.৯১ টাকায়। কিন্তু শর্ত হলো– আড়তদাররা ভোক্তা পর্যায়ে ১২ টাকায় বিক্রি নিশ্চিত করবেন।
ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান টিবিএসকে বলেন, গত মঙ্গলবার ভোক্তার সভায় মধ্যস্বত্বভোগী বাদ দিয়ে ডিম সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেখান থেকেই এই সিদ্ধান্ত।
জানা যায়, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাথে বৈঠকের পর বিপিআইসিসির ব্যবসায়ী নেতারা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন, যাতে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ডিম বিক্রি নিশ্চিত করা যায়।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের বন্যায় প্রায় ৫০ লাখ ডিমের উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাজারে সরবরাহ কমে যায়। বেড়ে যায় ডিমের দাম। প্রতি ডজন ১৫৫-১৬০ টাকা থেকে যা ১৮০ টাকায় পৌছে। এই অবস্থায়, খুচরায় সর্বোচ্চ দাম ১১.৮৭ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েও বাজার নিয়ন্ত্রণ মুশকিল হয়ে পড়ে।
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার দুটি পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এর একটি বাজারে মনিটরিং বাড়ানো এবং সাড়ে চার কোটি পিস ডিম আমদানির অনুমতি প্রদান। এই খবরে একদিকে ডিমের বাজারদর কমে ১৬৫-১৭০ টাকায় নামে এবং ভোক্তা অধিদপ্তর বাজারে অভিযান পরিচালনা করে শাস্তি প্রদান শুরু করে। এতে করে ঢাকার আড়তদাররা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
তেজর্গাঁওয়ের আড়তদাররা গত রোব ও সোমবার ডিম বিক্রি বন্ধ করে দেয়, দুদিন আড়তে কোন ট্রাক প্রবেশ করেনি, যেখান থেকে ঢাকায় প্রতিদিন ১৪-১৫ লাখ পিস ডিম সরবরাহ হয়। এতে করে আবার ডিমের দাম ১৮০-১৯০ টাকায় উঠে যায়, কারওয়ানবাজার এলাকায় ডিমের সংকট তৈরি হয়।
এই অবস্থার মধ্যে মঙ্গলবার ভোক্তা অধিদপ্তরের সভায় নতুন আড়তদারা ডিমের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসে। সেখানকার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম্য কমিয়ে সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রির উদ্দেশ্যে কর্পোরেট উৎপাদকদের সহযোগিতা চাওয়া হয়। এই প্রেক্ষাপটে, প্রতিদিন ২০ লাখ পিস ডিম সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিল বড় উৎপাদনকারীরা।