সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে রিভিউ আবেদনের শুনানি কাল
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/10/18/high_court.jpeg)
বিচারপতিদের অপসারণে জাতীয় সংসদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের শুনানি আগামীকাল রোববার (২০ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হবে।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে আপিল বিভাগের আগামীকালের দৈনন্দিন কার্যতালিকায় (কজলিস্ট) দেখা যায়, সরকারের পক্ষে দায়ের করা রিভিউ আবেদনটি শুনানির জন্য তালিকার প্রথমে রাখা হয়েছে।
'দলবাজ' ও 'দুর্নীতিবাজ' বিচারপতিদের পদত্যাগ কিংবা তাদের অপসারণের দাবিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট ঘেরাও এবং বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাদের দাবির মুখে ওই দিনই হাইকোর্ট বিভাগের ১২ বিচারপতিকে আপাতত বেঞ্চ না দেওয়া, অর্থাৎ বিচারকাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত জানান সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল- গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া দলবাজ-দুর্নীতিবাজ বিচারপতিদের অপসারণ করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমেদ ভুঞা বিক্ষোভকারীদের ওইদিন জানিয়েছিলেন, বিচারপতির পদত্যাগ বা অপসারণের একটি আইনগত প্রক্রিয়া আছে। বর্তমানে দেশে এ সংক্রান্ত কোনো আইন বিদ্যমান নেই। বিগত সরকার জাতীয় সংসদের মাধ্যমে বিচাপতিদের অপসারণের একটা বিধান করার উদ্যোগ নিয়েছিল, সংবিান সংশোধন হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট সেটি বাতিল করে দিয়েছেন।
সেই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করেছে। আগামীকাল সেই রিভিউ আবেদনের ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানি হবে।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানটি তুলে দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়।
সেই সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট হয়। ২০১৬ সালের ৫ মে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ বলে রায় দেন।
রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পাওয়ার পর ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি এ বিষয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে সর্বসম্মতিক্রমে চূড়ান্ত রায়টি দেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ। ওই রায় ঘোষণার পর একপর্যায়ে দেশত্যাগ করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
একই বছরের ১ আগস্ট ৭৯৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করে। রিভিউ আবেদনে সংবিধানোর ষোড়শ সংশোনী বহাল চাওয়া হয়।