আশুলিয়ায় সংঘর্ষে আহত নারী শ্রমিকের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
ঢাকার আশুলিয়ায় গত ২৩ অক্টোবর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে পোশাক শ্রমিকদের সংঘর্ষে আহত চম্পা খাতুন নামে এক নারী পোশাক শ্রমিক আজ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
আজ রবিবার (২৭ অক্টোবর) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. ফারুক।
মো. ফারুক বলেন, আশুলিয়ায় আহত হয়ে চম্পা খাতুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ সকালে ৮ টা থেকে সাড়ে ৮টার দিকে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, চম্পা খাতুন রংপুরের বাসিন্দা এবং জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন লিমিটেড কারখানার শ্রমিক। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তার বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, "চিকিৎসাধীন অবস্থায় চম্পা খাতুন আজ সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জেনেছি।"
এর আগে গত ২৩ অক্টোবর বেলা ১১টার দিকে আশুলিয়ার নরসিংহপুরের সিনসিন মোড় এলাকায় জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনের কয়েকটি শ্রমিকদের সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় আশেপাশের অন্যান্য কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরাও ছিল।
মূলত গত বেশ কয়েকদিন যাবত বকেয়া বেতন ভাতার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন লিমিটেড নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। কারখানাটির শ্রমিকরা এর আগে বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবিতে আশুলিয়ার বাইপাইল মোড়ে নবীনগর-চন্দ্রা সড়ক অবরোধ করেও বিক্ষোভ করে।
পরবর্তীতে গত ২৩ অক্টোবর সকালে কারখানাটির শ্রমিকরা নরসিংহপুরের সিনসিন মোড় এলাকায় জড়ো হয়ে সেখানে অবস্থিত বিভিন্ন কারখানা লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এক পর্যায়ে পুলিশ তাদের বাধা দিলে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এসময় শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হন। তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে আশংকাজনক হওয়ায় চম্পা খাতুনসহ দুজন নারী শ্রমিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর মধ্যে চম্পা খাতুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ঘটনার দিন মো. শামীম নামে জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন লিমিটেডের একজন শ্রমিক জানিয়েছিলেন, আন্দোলনরত শ্রমিকরা সেদিন প্রথমে কারখানার সামনে অবস্থান নেন। সেখান থেকে কোনো বিশৃঙ্খলা না করে শ্রমিকরা নরসিংহপুরের দিকে যাচ্ছিল। এসময় আশেপাশের আরও কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরাও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। শ্রমিকরা এসময় বাংলাবাজার এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ শ্রমিকদের উদ্দেশ্য করে রাবার বুলেট, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এতে অন্তত ৪০ থেকে ৫০ জন শ্রমিক আহত হয়েছিলেন বলে দাবি করেন তিনি।