শিবিরের আত্মপ্রকাশ, প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল
প্রায় ৩৫ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে এসেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। গতকাল মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাত ১১ টার দিকে শাখা ছাত্রশিবিরের ফেসবুক পেইজ থেকে জাকসু সচলসহ ক্যাম্পাসে সুস্থধারার অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির দাবিতে বিবৃতি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিবৃতির পর প্রকাশ্যে এসেছে শিবিরের তিন নেতার নাম। তারা হলেন, শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি হারুনুর রশিদ রাফি, সেক্রেটারি মহিবুর রহমান মহিব ও প্রচার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাকি।
এদিকে, এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের একাংশ।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে করেন শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের সভাপতি অমর্ত্য রায় বলেন, "১৯৭১ এবং ২০২৪, এই দুই সালকে যারা অস্বীকার করবে তাদের কখনোই জনগণ ক্ষমা করবে না। আজকে দেখলাম, শিবির যে প্রেস রিলিজ দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে সেখানে মিথ্যাচার করেছে। কবির ও দিপু হত্যা এবং হুটহাট সশস্ত্র আক্রমণ নিয়ে শিবির কখনও ক্ষমাপ্রার্থী হয়নি।"
তিনি বলেন, "ছাত্রশিবিরকে কোনোদিন দেখিনি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আন্দোলন করতে, কোনোদিন কি তারা শ্রমিক হত্যা নিয়ে আন্দোলন করেছে? তারা সব সময় শাহবাগ আর শাপলা চত্বর ভাগাভাগি করতে ব্যস্ত। এরকম বিভাজনের রাজনীতি করে আওয়ামী লীগ।"
তিনি আরও বলেন, "যে রাজনৈতিক দলের হাতে রক্তের দাগ রয়েছে সেই সংগঠনকে রাজনীতি করতে হলে বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আসতে হবে। সেটি সামাজিক বিচারও হতে পারে, আইনি বিচার হতে পারে। এজন্য ১৪ হাজার শিক্ষার্থীর কাছে ক্ষমা চেয়ে তাদের ক্যাম্পাসে আসতে হবে।"
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক সোহাগী সামিয়া বলেন, "স্পষ্ট করে বলতে চাই, ১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিল; সেসব ব্যক্তি কারা ছিল, তার চেয়ে আমাদের কাছে বড় হিসাব হলো, কোন সংগঠন ছিল।"
তিনি আরও বলেন, "যে সংগঠন বাংলাদেশকে কোনো দিন চায়নি, স্বাধীনতাকে চায়নি, সেই সংগঠন স্বাধীন বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করার অধিকার রাখে না। সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা আছে। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে দাঁড়িয়ে কোনোভাবেই একটি ছাত্রসংগঠন ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে পারবে না।"
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইসলামী ছাত্রশিবির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হারুনুর রশিদ রাফি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের (২০১৬-১৭ সেশন) শিক্ষার্থী এবং সেক্রেটারি মহিবুর রহমান বাংলা বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের (২০১৭-১৮ সেশন) শিক্ষার্থী। প্রচার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাকি ৪৭তম ব্যাচের (২০১৭-১৮ সেশন) দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী।