দুই বছর ঢাকা বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পেল বিমান
দুই বছরের জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন নির্মিত থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্ব পেয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
আগের প্রশাসনের সময় দীর্ঘ আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত এল। এর আগে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী উড়োজাহাজ সংস্থাটির সেবার মান নিয়ে বিদেশি এয়ারলাইনগুলোর উদ্বেগের কারণে জাপানের একটি প্রতিষ্ঠানকে এ দায়িত্ব দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল।
তবে অন্তর্বর্তী সরকার এখন বিমানের সেবাদানের সক্ষমতা দেখানোর সুযোগ দিয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়সীমা ও পারফরম্যান্সের শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
বিমানকে এ দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়ে ইস্যু করা চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন) মো. আলী আজম আল আজাদ বলেছেন, কনসেশন অ্যাগ্রিমেন্ট ফর টার্মিনাল ৩-এর আওতায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড মূলত থার্ড টার্মিনালের যাত্রী ও কার্গো উভয়ের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিস দেবে। এজন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড ও প্রাইভেট সেক্টর পার্টনারের (পিএসপি) মধ্যে একটি সার্ভিস লেভেল এগ্রিমেন্ট (এসএলএ) সম্পাদিত হবে।
২৪ অক্টোবর ইস্যু করা চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বিমান এই দুই বছরে পিএসপি নির্ধারিত কেপিআই পূরণ করতে পারলে তারা গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের চুক্তি নবায়নের সুযোগ পাবে। তবে বিমান যদি কেপিআই পূরণ করতে না পারে, তাহলে পিএসপি বিদেশি স্বনামধন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে বিমানের সঙ্গে দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্ব দিতে পারবে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত পিপিপি প্রকল্পের আওতায় 'অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স অব থার্ড টার্মিনাল অ্যাট হযরত শাহজালাল (এইচএসআইএ)' শীর্ষক এই প্রকল্পটির অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
এর আগে গত বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)-এর তৎকালীন চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেছিলেন, জাপান থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী এবং সরকার তাদেরকে এ কাজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বর্তমানে বিমান তাদের নিজস্ব ফ্লাইটের পাশাপাশি দেশের সবগুলো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিস পরিচালনা করছে। এ কাজ থেকে বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ১ হাজারথেকে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
তবে লাগেজ হ্যান্ডলিংয়সহ বিভিন্ন সেবায় তাদের বিলম্ব ও অদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যাত্রী ও স্টেকহোল্ডাররা। যদিও ঢাকা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, গত বছর লাগেজ প্রাপ্তিতে সময়ের উন্নতি হয়েছে।
বিমানের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম জানান, বিমানের গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইকুইপমেন্ট (জিএসই) বিভাগ সম্প্রসারিত হয়েছে এবং নতুন যন্ত্রপাতি যোগ হয়েছে।
তিনি বলেন, গত বছর থেকে বিমানের গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইকুইপমেন্ট (জিএসই) বিভাগে ১ হাজার কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৩ হাজার ৬০০টি মোটরচালিত ও অ-মোটরচালিত যন্ত্রপাতি যুক্ত হয়েছে।
বিমান কর্মকর্তারা বলেন, ২০২৩ সালে ৫৭ হাজারের বেশি ফ্লাইট হ্যান্ডলিংয়ের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বিমানের জিএসই বিভাগ তৃতীয় টার্মিনালের চাহিদা পূরণে ৬০০ কর্মী এবং ৩৭৬টি মোটরচালিত ও ৪ হাজাটি অ-মোটরচালিত যন্ত্রপাতি নিয়ে সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
এছাড়া ১০৫টি নতুন যন্ত্র ক্রয়ের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে এসব যন্ত্র চলে আসবে। এতে তাদের সেবার মান আরও উন্নত করবে।