রাষ্ট্র-রাজনীতি এগিয়ে নিতে দরকার কাঠামোগত পরিবর্তন: মির্জা ফখরুল
রাষ্ট্র ও রাজনীতিকে এগিয়ে নিতে কাঠামোগত পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে বিএনপির রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমার নাতি এখনও আমাকে জিজ্ঞাসা করে, স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কেন এত মারামারি, হানাহানি? এখনও কেন শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যবস্থা করতে পারি নাই আমরা?'
সাম্প্রতিক ইতিহাসের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের পর গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা 'আওয়ামী ফ্যাসিবাদ'র বিরুদ্ধে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কারের এই ৩১ দফা কেবল বিএনপির নয়, যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সব দলের সহযোগিতায় দাবিগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই ৩১ দফা শুধু বিএনপির নয়, এটি যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে প্রণয়ন করা হয়েছে। আমরা আশা করি যে অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য বিভিন্ন কমিশন করেছে তা সঙ্গে আমাদের এই ৩১ দফার বেশিরভাগই মিলে যাবে।
সেমিনারে ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ বলেন, 'সংবিধানের মূলনীতি হওয়ার উচিত সাম্য, সামাজিক মর্যাদা ও ইনসাফ। এগুলোই ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের মূলনীতি।'
এবি পার্টির নেতা ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, '৩১ দফার মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কারের জন্য কোনো দফা নেই। সব দফাই রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য। ৭০ এর অনুচ্ছেদ শুধু সংসদে চর্চা করলেই চলবে না, এটা দলের অভ্যন্তরেও আলোচনা করার কালচার তৈরি করতে হবে।
যুগপৎ আন্দোলনের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে গত বছরের ১৩ জুলাই 'সংবিধান ও রাষ্ট্রব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে 'রাষ্ট্র মেরামতে ৩১ দফা' ঘোষণা করে বিএনপি।
এর আগে ২০২২ সালের ১৯ ডিসেম্বর তারেক রহমান দলের 'রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা' ঘোষণা করেছিলেন।
২০১৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে খালেদা জিয়া 'ভিশন-২০৩০' উপস্থাপন করেন। তবে তার রাজনৈতিক ঘোষণাটি মূলত আসে আগেই। ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ক্ষমতায় গেলে তার দল জাতীয় সংসদকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করবে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর একক ক্ষমতা নিরসনকল্পে প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা হবে। রাষ্ট্রের এককেন্দ্রিক ক্ষমতা দূর করতে সংসদে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হবে।