মুক্তিপণ পেতেই ডাকাতির পর শিশুটিকে অপহরণ করা হয়: র্যাব
মুক্তিপণের উদ্দেশ্যে রাজধানীর আজিমপুরের একটি বাসা থেকে ডাকাতির পর ৮ মাসের শিশুকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।
তিনি বলন, "শুক্রবার মধ্যরাতে শিশু জাইফাকে উদ্ধারের সময় মূল অপহরণকারী ফাতেমা আক্তার শাপলাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার দেওয়া তথ্যমতে, মুক্তিপণের উদ্দেশ্যেই শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছিল।"
শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
এর আগে, শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকালে আজিমপুরের মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টারের একটি বাসা থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে ডাকাতরা। এ সময় তারা আট মাসের একটি শিশুকেও সঙ্গে নিয়ে যায়।
কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, আজিমপুরে বাসায় ডাকাতি ও শিশু অপহরণের ঘটনায় শাপলার সঙ্গে সুমন, রায়হান ও হাসান নামে আরও তিন সহযোগী ছিলেন। তাদের টার্গেট ছিল শিশু জাইফার বিনিময়ে তার মার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করা হবে। তবে ঘটনার পর গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হওয়ায় তারা আত্মগোপনে থাকেন।
র্যাব জানায়, শিশুটির মা ফারজানা আক্তার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টেনোগ্রাফার হিসেবে কর্মরত। তার বাবা আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালে ল্যাব সহকারী পদে চাকরি করছেন। প্রাতরক শাপলা প্রায় দুই সপ্তাহ আগে শিশুটির মা ফারজানাকে টার্গেট করেন। বাসে করে অফিসে যাতায়াতকালে অপহরণকারী শাপলা নানান কৌশলে শিশুর মায়ের সঙ্গে সু-সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বৃহস্পতিবার বিকালে তিনি ফারজানার বাড়িতে সাবলেটে উঠেন।
ওইদিন রাতে কৌশলে ভুক্তভোগীকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। পরদিন (শুক্রবার) সকালে শাপলার আরও তিনজন সহযোগী ওই বাড়িতে প্রবেশ করে। বাড়িতে থাকা নগদ ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, প্রায় ৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করা হয়। এরপর ৮ মাসের শিশু মেয়েটিকে অপহরণ করে নবীনগর হাউজিং এলাকায় চলে যায় প্রতারকরা।
এক প্রশ্নের উত্তরে লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, "শিশু অপহরণের ঘটনায় তার বাবা আবু জাফরকে নজরদারিতে রেখেছে র্যাব। শিশুর বাবা-মায়ের মধ্যে সাংসারিক ভাবে মনমালিন্য ছিল। তাই তারা আলাদা থাকতেন। তবে শিশুর বাবার আজিমপুরের বাসায় নিয়মিত আসা-যাওয়া ছিল। দিনে শিশুর সঙ্গে থেকে রাতে তিনি অন্যত্রে চলে যেতেন। এ ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।"
র্যাব আরও জানায়, অপহরণকারী শাপলার গ্রামের বাড়ি বগুড়া। তিনি ২০১৪ সাল পর্যন্ত লালমাটিয়া মহিলা কলেজে পড়াশোনা করলেও তা শেষ করেননি। মা-বোনের সঙ্গে তিনি আদাবর নবীনগর হাউজিংয়ে থাকতেন।