ব্যাপক শ্রম সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বাংলাদেশ: অধ্যাপক ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশে আরও বেশি বিদেশি ক্রেতা আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে ব্যাপক শ্রম সংস্কার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি বড় শ্রমিক ও ব্র্যান্ড প্রতিনিধিদল সোমবার (২৫ নভেম্বর) তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ে শ্রম ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য সাক্ষাৎ করতে এলে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
প্রতিনিধি দলকে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'আমরা আমাদের শ্রম আইনকে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে চাই। এটা আমার অঙ্গীকার।'
তিনি বলেন, দেশের শ্রম আইন সংস্কার এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রম অধিকার গোষ্ঠী, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা এবং পশ্চিমা দেশগুলোর উত্থাপিত উদ্বেগ নিরসনের জন্য একজন বিশেষ দূত নিয়োগ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মার্কিন শ্রম বিভাগের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি থিয়া মেই লি এবং আন্তর্জাতিক শ্রম বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি কেলি ফে রদ্রিগেজ।
যুক্তরাষ্ট্র, বৈশ্বিক শ্রম অধিকার গ্রুপ এবং বাংলাদেশ থেকে পোশাক ও জুতা কেনা শীর্ষ আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে শ্রম আইন সংস্কার ও শ্রমিকবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে অধ্যাপক ইউনূসের পদক্ষেপকে সমর্থন করে বলে জানান ওই দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
সরকার ও স্থানীয় ইউনিয়নগুলোর মধ্যে সই করা ১৮ দফা চুক্তির কথা উল্লেখ করে কেলি ফে রদ্রিগেজ বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত সাড়ে তিন মাসে শ্রম খাতের জন্য যা করেছে, 'এগুলো সবই চমৎকার প্রমাণ'।
লাখ লাখ পোশাক ও জুতা শ্রমিকদের রক্ষা ও মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে কারখানাগুলোতে ইউনিয়ন অধিকার এবং প্রতি বছর মজুরি পর্যালোচনার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
পোশাক কারখানাগুলোতে ন্যায্য ন্যূনতম মজুরির সুফল সম্পর্কে থিয়া মে লি বলেন, 'এটি ব্যবসার জন্য যেমন ভালো, তেমনি অর্থনীতির জন্যও ভালো।' তিনি বলেন, 'শ্রমিক ইউনিয়ন গণতন্ত্রের প্রশিক্ষণ ক্ষেত্র।'
পিভিএইচ, কেলভিন ক্লেইন এবং গ্যাপ ইনকর্পোরেটেড নামের তিনটি শীর্ষ মার্কিন ব্র্যান্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
পিভিএইচ করপোরেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইকেল ব্রাইড বলেন, তারা বাংলাদেশে শ্রম সংস্কারকে সমর্থন করেন। একইভাবে তারা কম্বোডিয়ায় অনুরূপ প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেন।
অধ্যাপক ইউনূস ব্র্যান্ডগুলোকে প্রতি জানুয়ারিতে তাদের অর্ডারের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান জানান, যাতে বাংলাদেশের উৎপাদনকারীরা সেই অনুযায়ী শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে পারে।
বৈঠকে মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মেগান বোলডিন উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অধ্যাপক ইউনূসের ব্যাপক শ্রম সংস্কার উদ্যোগে পূর্ণ সমর্থন দেয়। তিনি আরও বলেন, 'আমরা আপনাদের অংশীদার হতে চাই।'