ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন শেখ হাসিনার ক্যাশিয়ার: আসিফ নজরুল
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতির ক্যাশিয়ার ছিলেন তার ছোট বোন শেখ রেহানা বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, শেখ রেহানার ক্যশিয়ার ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক মন্ত্রী জোনায়েদ আহমেদ পলক। তাদের সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দাসে পরিণত হয়েছিল।
আজ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর কাকরাইলে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
গত ১৫ বছরে সরকারি-বেসরকারি দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, "গত ১৫ বছরে আমরা দেখেছি, ১০০ টাকার বালিশ ৪-৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্যাসিনো ব্যবসা করে ছিনতাইকারী হিসেবে পরিচিত একজন হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। একজন প্রধানমন্ত্রী তার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে সেটা হাসতে হাসতে বলছেন। অথচ দুদক ছিল, উচ্চ আদালত ছিল। বিচার হয়েছে? কিচ্ছু হয়নি। বিচার হয়েছে খালেদা জিয়ার।"
এসময় দুদকের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "এখন তো আপনাদের কেউ ফোন করছে না। এখন তাদের দুর্নীতি নিয়ে কাজ করেন। প্রমাণ করেন যে আপনারা ভালো পরিবেশ পেলে ভালোভাবে কাজ করতে পারেন। এখন সেগুলো তদন্ত করুন। এটাই এখন আপনাদের কাছে সারাদেশের আকাঙ্ক্ষা।"
তিনি বলেন, "যে-সব কাজ বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সাহায্যে করা সম্ভব সেগুলো আমরা করে ফেলব। আমরা দেরি করব না, আমাদের খুব বেশি সময় নেই। বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন কোনো প্রতিবেদন দেয়নি। আমি তাদের বললাম উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের জন্য আমরা একটা আইন করব, আপনারা আইন করে দিতে পারবেন কি না? পরে ওই কমিশনের রিপোর্ট ছাড়াই আমাদের আইন করে দিয়েছে।"
নতুন কমিশন নিয়োগ প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, "দুদকের ব্যাপারটা আমি দেখছি না। যারা দেখছেন বা যিনি দেখছেন তারা এ বিষয়ে সচেতন আছেন। দুদককে অচল রাখা যাবে না। এত বড় বড় দুর্নীতি হয়েছে, দুদককে অবশ্যই সচল করতে হবে।"
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ও দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।
এর আগে সকালে পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসের কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। এর পরপরই সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দুদকের মহাপরিচালক ও পরিচালকসহ সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন। পাশাপাশি আলোচনা সভা ও চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।