রাজনৈতিক সমঝোতা কঠিন, চাঁদাবাজির সমঝোতা সহজ: অর্থ উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা করা খুব কঠিন কাজ; সে তুলনায় চাঁদাবাজির সমঝোতা করা খুব সহজ। সরকার আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কমালেও – বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমছে না। এর পেছনে একটি কারণ সমঝোতার মাধ্যমে চাঁদাবাজি জারি রাখা।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, যেকোনো বাজারে গেলে দুই-তিন ধরনের চাঁদাবাজ দেখা যায়। এদের মধ্যে কিছু (চাঁদাবাজ) আছে যারা আগের সরকারের, এখন কিছু লোক এসেছে- তারা সামনে যে সরকার আসবে তাদের, আর কিছু লোক স্থানীয়। এরা পরস্পরের সাথে সমঝোতা করে চাঁদাবাজি করে।
আজ রোববার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশান ক্লাবে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের (আইবিএফবি) বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা। অনুষ্ঠানে কনফারেন্স স্পিকার ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
অনুষ্ঠানে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'আমি নিজে কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখেছি তিন ভাগে ভাগ করে চাঁদাবাজি করা হয়। এদের সবার মাঝে এক ধরনের সমঝোতা রয়েছে। অথচ আমাকে বলা হচ্ছে সিন্ডিকেট ভাঙো।'
পণ্যের উৎপাদন খরচ ও ভোক্তার ব্যয়ের মধ্যে দাম কমানোকে সরকারের মূল উদ্বেগের বিষয় উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, উৎপাদক ও ভোক্তার মাঝখানের বাড়তি দামটা দিতে হচ্ছে অকারণে। সরবরাহ শৃঙ্খলের মাঝে কিছু ব্যক্তি (মিডলম্যান) অবশ্যই থাকবে, যারা পণ্য সরবরাহে সহযোগিতা করে। কিন্তু, বাজারে একটা ট্রাকটা এলে তা ছুঁয়ে দিয়েই যারা বলে আমাকে ৫০০ টাকা দাও; তারা কোন মধ্যবর্তী লোক না, এরা চাঁদাবাজ। এভাবে পাঁচ লাখ টাকার পেঁয়াজবোঝাই ট্রাক বাজারে আসলে তা এক স্থানে দাঁড়িয়েই সাত লাখ টাকা হয়ে যায়।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দেশে দুর্নীতির কথা তুলে ধরে অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, 'চুরি অনেক দেশেই হয়েছে। তবে বাংলাদেশে এটা এত ব্যাপক যে আপনারা চিন্তাও করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে সরকারের রেগুলেটরি ফেইলিওর রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো সব ধ্বংস করা হয়েছে। নীতিনির্ধারক, আমলা, ব্যবসায়ী— সবাই মিলে নিয়ম ভেঙেছে।'