কেরানীগঞ্জে ব্যাংক ডাকাতিচেষ্টার ঘটনায় মামলা, ৩ ডাকাতকে গ্রেপ্তার দেখাল পুলিশ
কেরানীগঞ্জে রূপালী ব্যাংকের জিঞ্জিরা শাখায় ডাকাতির চেষ্টাকালে আত্মসমর্পণকারী তিন সন্দেহভাজন ডাকাতকে এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) জাহাঙ্গীর আলম আজ শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বলেন, 'গতকাল রাতে ওই শাখার একজন ব্যাংক কর্মকর্তা বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় লিওন মোল্লা নিরব (২২), আরাফাত (১৬) ও সিফাত (১৬) নামে তিনজনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।'
তিনি আরও বলেন, 'আসামিদের বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগ আনা হয়েছে এবং আজ তাদের আদালতে হাজির করা হবে। লিয়ন মোল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।'
গতকাল দুপুর ২টার দিকে সন্দেহভাজন ডাকাতরা ব্যাংকে ঢুকে ব্যাংকের কলাপসিবল গেটে তালা লাগিয়ে কর্মকর্তা ও গ্রাহকদের জিম্মি করে। ডাকাতির খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে তারা কয়েকটি মোবাইল নম্বর লেখা একটি চিরকুট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে পাঠায়। এরপর সেই মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে ডাকাত দলের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তারা আলোচনা করে তাদের আত্মসমর্পণে রাজি করান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ডাকাত দলের সদস্যরা প্রথমে জানালা দিয়ে একটি 'বন্দুক' ফেলে দেয়। এরপর তারা বাকি 'অস্ত্র' ব্যাগে ভরে বাইরে ফেলে দেয়। পরে একে একে ডাকাত দলের সদস্যরা বের হয়ে আসে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তখন তিন ডাকাতকে গাড়িতে করে নিয়ে যায়।
ওইদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে ব্যাংকের ভেতর প্রবেশ করেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ব্যাংকের ভেতরে থাকা কর্মকর্তা ও গ্রাহকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে থাকা যৌথ বাহিনীর সদস্যরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানতে পারেন, ওই তিনজনের কাছে থাকা 'অস্ত্রগুলো' মূলত খেলনা।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাব আল হাসান জানান, ডাকাতদের কাছ থেকে চারটি খেলনা পিস্তল ও দুটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
পরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আহম্মদ মুঈদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'ডাকাতরা মুভি দেখে অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে ডাকাতি করতে এসেছিল বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে। যদিও তারা আমাদের বলেছে, মৃত্যুশয্যায় থাকা এক কিডনি রোগীকে বাঁচাতে ব্যাংকে ডাকাতি করতে এসেছিল। তবে তারা যে রোগীর ঠিকানা দিয়েছে সেটি যাচাই-বাছাই চলছে। আদৌও সত্য কি না পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।'