বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের পার্লামেন্টকে কী জানানো হলো?
বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিয়ে আলোচনা হয়েছে ভারতের রাজ্যসভায়। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে রাজ্যসভাকে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'সব নাগরিকের, বিশেষত সংখ্যালঘুদের, জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষার মূল দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের ওপর নির্ভর করে'।
তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে ভারত আশা করে।
ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার বরাতে প্রতিমন্ত্রী দাবি করেন, এ বছরের ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ২ হাজার ২০০টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া, ২০২২ সালে ৪৭টি এবং ২০২৩ সালে ৩০২টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা রেকর্ড হয়েছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর সহিংসতার ঘটনা ঘটার ব্যাপারে ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলো বিভ্রান্তিকর এবং অতিরঞ্জিত বলে শুক্রবার এক বিবৃতি দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রেস উইং।
প্রেস উইং জানিয়েছে, এসব ঘটনার বেশিরভাগই ৫ আগস্ট থেকে ৮ আগস্টের মধ্যে ঘটেছে, যখন দেশে কোনো সরকার ছিল না এবং এসব হামলার বেশিরভাগই ঘটেছে রাজনৈতিক কারণে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের মতে, ৫ আগস্ট থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ৮৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, 'যারা এ ধরনের সহিংসতার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।'
তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ৮৮টি মামলা নথিভুক্ত হলেও তাদের নজরে এসেছে যে, অনেক ক্ষেত্রেই সহিংসতার শিকার ব্যক্তিরা আগের ক্ষমতাসীন দলের সদস্য ছিলেন।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদও ভারতীয় মন্ত্রীর উল্লিখিত পরিসংখ্যানের কাছাকাছি তথ্য তুলে ধরেছে। ঐক্য পরিষদের দাবি, এ বছরের ৪ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অন্তত ২ হাজার ১০টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
কীর্তি বর্ধন সিং দাবি করেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ ছাড়া ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা নেই। তবে তার বক্তব্যে মিয়ানমারের মুসলিম নিপীড়ন বা ভারতের অভ্যন্তরে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কোনো উল্লেখ ছিল না।
তবে, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শুরুতে এবং ভারতের জাতীয় নির্বাচনগুলোর পূর্বে ও পরবর্তী সময়ে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।