বাংলাদেশে প্রথম জলবায়ু-বান্ধব স্টিল কারখানা নির্মাণে আইএফসি ও মেঘনা গ্রুপের মধ্যে চুক্তি
বাংলাদেশে প্রথম জলবায়ু-বান্ধব স্টিল কারখানা নির্মাণের লক্ষ্যে মেঘনা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান মেঘনা রি-রোলিং অ্যান্ড স্টিল মিলস লিমিটেড-এর (এমআরএসএল) সাথে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের সদস্য ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন-এর (আইএফসি) একটি চুক্তি হয়েছে।
আধুনিক এই কারখানা বছরে ১৫ লাখ মেট্রিক টন স্টিল উৎপাদন করবে এবং দেশের বার্ষিক চাহিদার প্রায় ২০ শতাংশ পূরণ করবে। এখানে শতভাগ রিসাইকেলকৃত ধাতব বর্জ্য ব্যবহার করা হবে। ফলে এটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়ক হবে।
এই প্রকল্পে ১০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। এটি পরিবেশ, সমাজ এবং অর্থনীতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সুফল আনবে। উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে এটি প্রচলিত স্টিল উৎপাদনের তুলনায় কম কার্বন নিঃসরণ করবে। এ প্রকল্পের ফলে ২০ হাজারের বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
আইএফসির কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হোল্টম্যান বলেন, "বাংলাদেশের স্টিল শিল্প দেশের টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই প্রকল্প কেবল জলবায়ু-বান্ধব উৎপাদনে নয়, কর্মসংস্থান ও শিল্প উন্নয়নে বড় অগ্রগতি। আমরা বাংলাদেশের শিল্প খাতে এই রূপান্তরের অংশ হতে পেরে আনন্দিত।"
এই প্রকল্প প্যারিস চুক্তির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ এবং বৈশ্বিক জলবায়ু আর্থিক নীতিমালার মানদণ্ড পূরণ করেছে। আইএফসি ও এমআরএসএল একটি ডিকার্বনাইজেশন রোডম্যাপ তৈরি করছে, যা দেশের শিল্প খাতে টেকসই উন্নয়নের নতুন মানদণ্ড স্থাপন করবে।
মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, "এই যুগান্তকারী প্রকল্পে আইএফসির সঙ্গে অংশীদার হতে পেরে আমরা গর্বিত। এটি শুধু উচ্চমানের জলবায়ু-বান্ধব স্টিল উৎপাদন সক্ষমতাই বৃদ্ধি করবে না, বরং আমাদের দেশের অর্থনৈতিক ও শিল্প উন্নয়নে বড় অবদান রাখবে।"
এই বিনিয়োগ ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের গ্রিন, রেজিলিয়েন্ট অ্যান্ড ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট (গিআরআইডি) ভিশনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি জলবায়ু-বান্ধব অবকাঠামো, অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য এবং শিল্প প্রতিযোগিতার উন্নয়নকে উৎসাহিত করবে।
আইএফসি একটি বৃহত্তম বৈশ্বিক উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান। এটি ১০০টিরও বেশি দেশে কাজ করে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বাজার এবং সুযোগ তৈরি করতে পুঁজি, দক্ষতা ও প্রভাব ব্যবহার করে।
মেঘনা গ্রুপ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম ও বৈচিত্র্যময় গ্রুপ। এটি ফাস্ট মুভিং কনজিউমার গুডস (এফএমসিজি), নির্মাণ সামগ্রী, কাগজের কাঁচামাল, এলপিজি, খাদ্য, ফাইবার, বিদ্যুৎকেন্দ্র, বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন, শিপিং, রাসায়নিক, জাহাজ নির্মাণ, বীমা, মিডিয়া এবং বিমান পরিবহনসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসা পরিচালনা করছে।