বছরের প্রথম দিনে সব বই পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা
বছরের প্রথমদিনে বই ছাড়াই স্কুল থেকে ফিরে যাচ্ছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বিভিন্ন স্কুলে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বই বিতরণ হলেও রাজধানীসহ দেশের বেশকিছু স্কুলে সেটিও বিতরণ হচ্ছেনা।
ইস্পাহানি বালিকা বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া রূপা জানায়, "আমাদের তিনটি বই দিয়েছে। বাংলা, ইংরেজি এবং অংক। সায়েন্স, আর্টসের কোনো বই এখনও পাইনি।"
এছাড়া, অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীরা জানায়, তারা ইংরেজি, গণিত ও ইসলাম শিক্ষা বই পেয়েছে।
দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী সাবিনা আক্তার বলে, "আমি কোনো নতুন বই পাইনি। স্যারেরা বলেছে কয়েকদিনের মধ্যেই বই দেবে। আজকে বই না নিয়েই যাচ্ছি আমরা।"
স্কুলটির কয়েকজন শিক্ষক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, স্কুলে শুধু অষ্টম ও দশম শ্রেণির বই এসেছিল তিনটি করে, সেগুলো বিতরণ করা হয়েছে। অন্য কোনো শ্রেণির বই না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের নতুন বই দেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বই ঊর্ধ্বতন অফিস থেকে আনতে পাঠানো হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই সেগুলো দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছেন তারা।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক (মূল প্রভাতি) মুসতারী সুলতানা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমরা আসলে বই উৎসবের কোনো নোটিশ না পেলেও ঘরোয়াভাবে চেষ্টা করেছি। আমরা ক্লাস এইট, নাইন ও টেন এর বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই দিতে পেরেছি।"
বই না পাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রমে অসুবিধা হবে কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "আমরা আশা করছি, ৩০ জানুয়ারির মধ্যে সব বই না পেলেও সমস্যা হবে না। কারণ জানুয়ারি মাসে সাধারণত এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস চর্চা হয় বেশি। ফেব্রুয়ারি থেকে পুরোদমে ক্লাস শুরু হয়। আমরা ইতোমধ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ও অভিভাবকদের বইগুলো অনলাইনে কালেক্ট করতে বলেছি। এছাড়াও, গুরুত্বপূর্ণ বইগুলোর প্রথম চ্যাপ্টার প্রিন্ট করে, অথবা পুরাতন বই সংগ্রহ করার পরামর্শ দিয়েছি।"
তিনি জানান, "প্রাইমারির বইগুলো থানাভিত্তিক দেওয়ার কারণে আমাদের রমনা থানার স্কুলগুলোতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বই আসেনি। তবে অন্যান্য থানা দেওয়া হয়েছে।"
জানা যায়, অন্তর্বর্তী সরকার ঘটা করে বই উৎসব করবে না। বই বিতরণ কার্যক্রমও উদ্বোধন করা হবে না। শুধু পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন করবে সরকার।
আজ ১ জানুয়ারি সকাল ১০টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
এদিকে, ছাপার কাজ শেষ না হওয়া বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীরা সব বই পাবে না বলে জানিয়েছে এনসিটিবি।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত সব বই ছাপানোর কাজ শেষ। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই ছাপানো বাকি রয়েছে। তাদের জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।
অন্যদিকে, মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রথমদিকে বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই দেওয়া হবে। বাকি বই দুই ধাপে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এনসিটিবির নির্ধারিত সময় আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত।