যশোরে আজহারীর মাহফিলে অসংখ্য মানুষের মোবাইল, সোনার গয়না খোয়া; সাড়ে ৩০০’র বেশি জিডি
যশোরে ইসলামিক স্কলার মিজানুর রহমান আজহারীর ওয়াজ মাহফিলে মোবাইল ফোন, স্বর্ণালঙ্কার এবং অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী চুরির অভিযোগে শতাধিক ভুক্তভোগী ৩৫০টিরও বেশি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করেছেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ডিউটি অফিসার শারমিন আক্তার শনিবার (৪ জানুয়ারি) জানান, "গতকাল [৩ জানুয়ারি] রাতে শহরের পুলেরহাটের আদ-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বর এবং আশপাশের এলাকায় এ চুরির ঘটনা ঘটে।"
"আজ শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চুরির বিষয়ে ৩৫০টিরও বেশি জিডি হয়েছে। আমরা ধারণা করছি, আরও ভুক্তভোগী এগিয়ে এলে এ সংখ্যা বাড়তে পারে," দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন তিনি।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে একজন রূপদিয়ার ইব্রাহিম হোসেন জানান, তার মায়ের সোনার নেকলেস চুরি হয়েছে। "আজহারীর ওয়াজ শোনার সময় আমার মা টের পান, তার গলার হার নেই। তাই আমি থানায় এসে জিডি করেছি।"
নোয়াপাড়ার হয়রত হোসেনও তার স্ত্রীর চেইন চুরি হওয়ার পর জিডি দায়ের করেন। তিনি নিরাপত্তার অভাব নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে এমন অনুষ্ঠানের জন্য আরও ভালো ব্যবস্থাপনার দাবি করেন।
"কর্তৃপক্ষের আরও সর্তক হওয়া ও ব্যবস্থাপনা ভালো করা উচিত ছিল। আর আমাদেরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল — ব্যাপক জনসমাগমের স্থানে দামি জিনিসপত্র গায়ে দিয়ে ও সঙ্গে নিয়ে যাওয়া উচিত হয়নি," বলেন এ ভুক্তভোগী।
শহরের বেজপাড়া এলাকার এনামুল হক বলেন, "এটি যশোরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সমাবেশের একটি ছিল। ওয়াজ মাহফিলে গিয়েছিলাম ঈমান-আমল ঠিক করতে। আর চোরেরা তাদের ব্যবসা খুঁজে নিল।"
তিনি আরও বলেন, "অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে এসেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় জিডি করতে পারেননি। ধর্মীয় সমাবেশে চুরির মতো অপরাধ যারা করে, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা উচিত।"
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী এ ওয়াজ মাহফিলে প্রায় ৫-৭ লাখ মানুষ অংশ নেন।
তিনি বলেন, "চুরির বিষয়ে খবর পেয়েছি, এবং অনেকেই জিডি দায়ের করেছেন। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।"
মাহফিলে পদদলিত হয়ে নিহত হওয়ার গুজব সম্পর্কে ওসি বলেন, "সোশ্যাল মিডিয়ায় পদদলিত হয়ে মৃত্যুর গুজব ছড়ানো হচ্ছে। কিন্তু এ ধরনের কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। আমি সবাইকে অনুরোধ করছি, এ ধরনের গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন।"