এ মাসে টিসিবির পণ্যে থাকছে না চাল; কোনো পণ্যই পাবেন না অন্তত ৩৭ লাখ কার্ডধারী
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডের পণ্যতালিকা থেকে জানুয়ারি মাসে চাল বাদ দেওয়া হয়েছে। টিসিবি জানিয়েছে, খাদ্য অধিদপ্তর থেকে চাল সরবরাহ না করায় এমনটি হয়েছে।
এছাড়া হাতে লেখা কার্ড পরিবর্তন করে স্মার্ট কার্ড চালুর কারণে জানুয়ারি মাসে অন্তত ৩৭ লাখ কার্ডধারী টিসিবির কোনো পণ্যই পাবেন না।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) টিসিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জানুয়ারি মাসে কার্ডধারীরা দুই লিটার ভোজ্যতেল, দুই কেজি মসুর ডাল এবং এক কেজি চিনি কিনতে পারবেন।
আগামীকাল বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর বেগুনবাড়ি এলাকায় জানুয়ারি মাসের বিক্রয় কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
২০২৩ সালের জুলাই মাস থেকে টিসিবি প্রতি ফ্যামিলি কার্ডের বিপরীতে ৩০ টাকা কেজি দরে পাঁচ কেজি চাল সরবরাহ করে আসছিল। খাদ্য অধিদপ্তর এ চাল সরবরাহ করত।
চাল সরবরাহ বন্ধের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে টিসিবির তথ্য কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'খাদ্য অধিদপ্তর ডিসেম্বর পর্যন্ত চাল সরবরাহ করেছে। জানুয়ারিতে চাল সরবরাহ না পাওয়ায় এ মাসে চাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমরা খাদ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। চাল পাওয়া গেলে পুনরায় সরবরাহ শুরু হবে।'
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খাদ্য অধিদপ্তর প্রতি মাসে টিসিবিকে ৫০ হাজার টন চাল সরবরাহ করে। তবে এ বরাদ্দের জন্য খাদ্য অধিদপ্তর বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজেটে কোনো অর্থ বরাদ্দ নেই।
ফলে খাদ্য অধিদপ্তর আর চাল সরবরাহ করতে পারছে না। চালের মূল্য পরিশোধ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় সরবরাহ আপাতত স্থগিত রয়েছে।
চাহিদা মেটাতে খাদ্য মন্ত্রণালয় খোলা বাজারে বিক্রির জন্য এক হাজার৫৩৪ কোটি টাকা এবং চাল আমদানির জন্য তিন হাজার ৩৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে মোটা চালের দাম গত এক সপ্তাহে কেজি প্রতি ৩-৪ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি মোটা চাল ৫৪-৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল ৫০-৫৫ টাকা।
টিসিবি জানায়, বর্তমানে এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে ভোজ্যতেল, ডাল, চিনি নিয়মিত থাকে। পাশাপাশি কখনো কখনো পেঁয়াজ ও চাল সরবরাহ করা হয়। রমজান মাসে যোগ হয় ছোলা ও খেজুর।
এতদিন ফ্যামিলি কার্ড হাতে লেখা ছিল। সরকার বর্তমানে স্মার্ট ডিজিটাল কার্ড চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।
টিসিবির তথ্য কর্মকর্তা জানান, 'এখন পর্যন্ত ৫৭ লাখ গ্রাহক স্মার্ট কার্ড পেয়েছেন। আরও ছয় লাখ কার্ড প্রস্তুত হচ্ছে। এ মাসের মধ্যেই এগুলো গ্রাহকদের হাতে পৌঁছানো যাবে বলে আশা করছি।'
তিনি আরও বলেন, এ ছয় লাখ কার্ড বিতরণ শেষ হলে সর্বোচ্চ ৬৩ লাখ গ্রাহক জানুয়ারি মাসে টিসিবি থেকে পণ্য কিনতে পারবেন। বাকি ১৩ লাখ কার্ডধারীর এনআইডি ও অন্যান্য তথ্য যাচাই চলছে। যাচাই শেষে যোগ্য ব্যক্তিদের জন্য নতুন কার্ড ইস্যু করা হবে।