ধর্মঘট প্রত্যাহার করলেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা
দাবি পূরণের আশ্বাসের পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফরা।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো: মজিবুর রহমান মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে রেলওয়ে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
মজিবুর রহমান বলেন, "উপদেষ্টা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন, আগামীকাল (বুধবার) আমাদের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আমরা জনদুর্ভোগ চাই না। আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা এখন থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।"
তিনি আরও বলেন, "উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন, আমরা আগে যা পেয়ে আসছিলাম, তা পাব।"
বৈঠকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, ন্যাশনালিস্ট ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা শিমুল বিশ্বাস, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) মধ্যরাতের পর থেকেই বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন রেলপথে চলাচলকারী সাধারণ যাত্রীরা।
জানা যায়, রেলওয়ের রানিং স্টাফরা মাইলেজের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক প্রদান এবং নিয়োগপত্রের দুটি শর্ত প্রত্যাহারের জন্য কর্তৃপক্ষকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। অন্যথায় ২৮ জানুয়ারি থেকে তারা ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
রেলওয়ের রানিং স্টাফ বলতে ট্রেনের চালক, সহকারী চালক, গার্ড ও টিকিট পরিদর্শকদের (টিটিই) বোঝানো হয়। আট ঘণ্টার কর্মদিবস থাকলেও তাদের গড়ে ১৫–১৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। এ কারণে তাদের বেতনের সঙ্গে বিশেষ আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়, যা রেলওয়ের পরিভাষায় 'মাইলেজ' নামে পরিচিত। প্রতি ১০০ কিলোমিটার ট্রেন চালালে রানিং স্টাফরা মূল বেতনের এক বেসিক সমপরিমাণ অর্থ বেশি পান।
আট ঘণ্টাকে এক দিনের কর্মদিবস ধরা হলে তাদের মাসিক কাজ দু–তিন মাসের সমপরিমাণ হয়ে দাঁড়ায়। সে অনুযায়ী তাদের বেতনও প্রদান করা হয়। অবসরকালীন ভাতা হিসেবেও তাদের মূল বেতনের হিসেবে যে ভাতা হয়, তার সঙ্গে অতিরিক্ত ৭৫ শতাংশ অর্থ দেওয়া হয়।
তবে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় এ মাইলেজ সুবিধা বাতিল করে। এরপর থেকেই বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদ ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করে আসছে।