বাংলাদেশ সব চুক্তি ও সমঝোতাকে সম্মান জানাবে বলে আশা করছে দিল্লি: ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
চলতি মাসে ভারতের নয়াদিল্লিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন হবে। এই সম্মেলনকে সামনে রেখে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ভারত সরকার আশা করে, বাংলাদেশ আগের সব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারককে (এমওইউ) সম্মান জানাবে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ফেব্রুয়ারিতে বিজিবি ও বিএসএফ এরমধ্যে (মহাপরিচালক পর্যায়ে) সম্মেলন হবে। আমাদের প্রত্যাশা সেখানে পরস্পরের সম্মতির ভিত্তিতে হওয়া সব চুক্তি ও এমওইউকে সম্মান জানানো হবে।
আগামী ১৭ থেকে ২০ জানুয়ারি নয়াদিল্লিতে সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
ভারতের সঙ্গে চারটি চুক্তি হওয়ার কথা উল্লেখ করে গত বুধবার বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ২০১০ সালে যে চুক্তিটি হয়েছে, সেটির ভেতরে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। চুক্তিটি কিছুটা অসম।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এ বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেন, দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের সম্মেলনে সীমান্ত–সম্পর্কিত সব বিষয় নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, 'আমরা আশা করি, পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে হওয়া সব চুক্তির প্রতি সম্মান দেখানো হবে। ভারত ও বাংলাদেশ এবং বস্তুত দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে কাঠামোগত সম্পর্কের ভিত্তিতে এসব চুক্তি হয়েছে।'
রণধীর জয়সোয়াল আরও বলেন, 'এসব চুক্তি ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তে উভয়ের জন্য সুবিধাজনক নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও অবকাঠামো তৈরির সুযোগ এনে দিয়েছে। তাই আমরা আশা করি, সবগুলো চুক্তিকে সম্মান জানানো হবে।'
জয়সোয়াল বলেন, 'আসন্ন এই সম্মেলনে সীমান্ত-সংস্লিষ্ট সব বিষয়ে আলোচনা করা হবে। আমরা আশা করছি, সেখানে উভয়পক্ষের মধ্যে হওয়া (আগের) সব এমওইউ ও চুক্তিকে সম্মান জানানো হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কাঠামোগত সম্পৃক্ততার জন্য বা দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সংলাপের এটিই মূল ভিত্তি।'
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকেই বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে নানান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি দেখা গেছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে ৫ আগস্টের পরে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন, আবার সীমান্তে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে বেড়া নির্মাণের কাজও করেছে ভারত, যেখানে বিজিবি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
এই অবস্থায়, ভারতের সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে সীমান্তে উস্কানিমূলক যেকোনো কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখতে দেশটির সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় ঢাকা।