অগ্রিম ১০,০০০ টাকা পাচ্ছেন ট্যানারি শ্রমিকরা, ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নে পরবর্তী বৈঠক ২০ ফেব্রুয়ারি
চামড়া শিল্পের শ্রমিকদের জন্য সরকার ঘোষিত পাঁচটি গ্রেডে ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পেরে আপাতত প্রত্যেক শ্রমিককে গত মাসের (জানুয়ারি) বেতনের পাশাপাশি অগ্রিম ১০,০০০ করে টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গতকাল শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের ধানমন্ডির কার্যালয়ে আয়োজিত এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এছাড়া, ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনার জন্য আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
গতকালের সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ), বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন, ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
শ্রমিকদের প্রদানকৃত অগ্রিম এই টাকা- ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার পর শ্রমিকদের বর্ধিত বেতন থেকে ধাপে ধাপে সমন্বয় করা হবে বলে জানিয়েছেন বিটিএর সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত উল্লাহ।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, "শ্রমিকদের বেতন বাড়বে—এটাতে সবাই সম্মত। কিন্তু যেহেতু আমরা এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি, কাজেই গত মাসের বেতনের সঙ্গে শ্রমিকদের অগ্রিম ১০ হাজার করে টাকা অতিরিক্ত প্রদান করতে বলা হয়েছে, যা পরবর্তীতে ন্যূনতম মজুরির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার পর শ্রমিকদের বর্ধিত বেতন থেকে ধাপে ধাপে সমন্বয় করা হবে।"
তিনি আরও বলেন, "সামনে আমাদের বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন। এছাড়া কিছু আনুষঙ্গিক কার্যক্রম রয়েছে। এসব কার্যক্রম শেষে আমরা আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি আবারও মিটিং করব। এবং আশা করছি, যে সমস্যাগুলো আছে- এক বা দুটি মিটিংয়ে তার সমাধান দিতে পারব। বৈঠকে সবাই এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন।"
ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "গতকালের মিটিং থেকে ন্যূনতম মজুরির বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় আপাতত মজুরি বৃদ্ধির পর শ্রমিকদের যে বকেয়া হবে, তা থেকে প্রত্যেক শ্রমিককে অগ্রিম ১০ হাজার করে টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসার পর এটি সমন্বয় করা হবে। যেহেতু বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন চলমান, নির্বাচন শেষে আগামী ২০ তারিখে পুনরায় বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।"
এদিকে, গতকালের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার পর আপাতত আন্দোলন স্থগিত করেছেন ট্যানারি শ্রমিকরা।
তারা বলছেন, ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা আন্দোলন স্থগিত করেছেন।
গত কয়েকদিনের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখা এপেক্স ট্যানারির শ্রমিক ও ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের শ্রমিক প্রতিনিধি নিলুফা বেগম টিবিএসকে বলেন, "ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে আপাতত যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের আশ্বাসে আমরা তা মেনে নিয়ে আন্দোলন স্থগিত রেখেছি। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি পুনরায় মিটিংয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে, আশা করছি সেই মিটিংয়ে শ্রমিকদের দাবি প্রতিফলিত হবে।"
উল্লেখ্য, দেশের চামড়া শিল্পের শ্রমিকদের জন্য সরকার ঘোষিত পাঁচটি গ্রেডে ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে টানা আন্দোলন করে আসছিলেন ট্যানারি শ্রমিকরা, যা গত সপ্তাহের শেষদিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।