বাড়তি শুল্কারোপের প্রতিবাদে বেনাপোল দিয়ে ফল আমদানি বন্ধ
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/04/2004733-ezgif.com-webp-to-jpg-converter.jpg)
বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের ডাকা ধর্মঘটের প্রভাবে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ফল আমদানি বন্ধ রয়েছে। এতে সরকারের রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের ধাক্কা খাবে।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই ফল আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আগামীকাল বুধবারও ফল আমদানি বন্ধ থাকবে।
বন্দর ও ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, ভারত থেকে যেসব খাদ্য আমদানি হয় এর বড় অংশ তাজা ফল। আগে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আদায় করত কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এতে প্রতি কেজি ফলে সরকারকে রাজস্ব দিতে হতো ১০১ টাকা। হঠাৎ করেই গত ৯ জানুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নতুন এক নির্দেশনায় ফল আমদানির ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করে। এতে বর্তমানে কেজিতে শুল্ককর ১৫ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৬ টাকা। ফলে আমদানি খরচ বাড়ায় দাম বাড়িয়েছে খোলা বাজারে বিক্রেতারা।
বাণিজ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইতোমধ্যে শুল্ককর বৃদ্ধিতে বাজারে কেজিতে ফলের দাম বেড়েছে ৩০-৪০ টাকা পর্যন্ত। আমদানি কার্যক্রম বন্ধ থাকলে আগামীতে ফলের বাজার আরও ঊর্ধ্বগতির আশঙ্কা রয়েছে।
জানা যায়, বর্তমানে যশোরের খুচরা বাজারে এক কেজি আপেল প্রকারভেদে ৩০০-৩৬০, মালটা কেজি ৩০০-৩২০, কমলা ২৫০-৩০০ এবং আঙুর প্রকার ভেদে ৪৫০-৫০০ টাকা, ডালিম ৪৫০-৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
ফল বিক্রেতা আবদুল করিম বলেন, 'মোকাম থেকে বেশি দামে ফল কিনতে হওয়ায় বেশিতে বিক্রি করতে হচ্ছে।'
রমজানের আগ মুহূর্তে ফলের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।
ফল ক্রেতা রহমত আলী বলেন, 'রমজানের আগেই দাম বৃদ্ধি, ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। এ সিদ্ধান্ত নিম্নআয়ের মানুষের ওপর চাপ বেশি পড়বে।'
বন্দর শ্রমিক আলী বলেন, 'বেনাপোল বন্দর দিয়ে দিনে শতাধিক ট্রাক ফল আমদানি হতো। এখন বন্ধ থাকায় শ্রমিকেরা বেকার হয়ে পড়েছে।'
ফল আমদানিকারক শেখ মেহেদী হাসান বলেন, 'অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফল আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে কোনো ফল আমদানি তারা করছেন না।'
বেনাপোল বন্দর ওয়ারহাউজ সুপারেন্টেন্ড তানজিবুর রহমান বলেন, 'ফল ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ফল আমদানি বন্ধ থাকায় রাজস্ব আয় কমেছে। ধর্মঘটে দুই দিন ফল আমদানি বন্ধে বেনাপোল বন্দর থেকে সরকার প্রায় একশ' কোটি টাকা টাকার রাজস্ব হারাবে।'
বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে গত ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন সংবাদ সম্মেলন করে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাড়তি শুল্ক কর তুলে না নেওয়া হলে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের সব স্থলবন্দর, নৌ-বন্দর দিয়ে তাজা ফল আমদানি বন্ধ রাখা হবে বলে আল্টিমেটাম দেয়।
কিন্তু এ পর্যন্ত রাজস্ব বোর্ড বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত না জানানোয় আমদানিকারকেরা ফল আমদানি বন্ধ রাখে। আপাতত ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি দুই দিন বন্ধ থাকবে ফল আমদানি বন্ধ থাকবে। এর মধ্যে বর্ধিত শুল্ককর তুলে না নিলে পরবর্তীতে আবারও কর্মসূচি দেবে বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টস অ্যাসোসিয়েশন।