প্রতিমন্ত্রী মুরাদকে পদত্যাগের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
অনলাইন টকশোতে এসে কুরুচিপূর্ণ ও বর্ণবাদী বক্তব্যের জন্য তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার রাতে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
কাদের বলেন, "আজ সন্ধ্যায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে এবং আমি আজ রাত ৮ টায় প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে বার্তাটি পৌঁছে দিই।"
এদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, প্রতিমন্ত্রী মুরাদের বিষয়টি দলীয় বৈঠকে আলোচনা করা হবে।
তিনি জানান, মুরাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে।
"আমরা অডিওটি শুনেছি। তিনি যা বলেছেন তা নৈতিকতার লঙ্ঘন," বলেন হানিফ।
সম্প্রতি বিএনপি নেতা তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে ডা. মুরাদ হাসানের দেওয়া 'অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ' বক্তব্যের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এরপর রোববার রাতে ফাঁস হয় ঢাকাই সিনেমার একজন নায়িকাকে 'ধর্ষণ' এর হুমকি দেওয়ার একটি অডিও ক্লিপ। এরমধ্যে আরেকটি অনলাইন টকশোতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নারী নেত্রীদের নিয়েও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিতে দেখা যায় প্রতিমন্ত্রী মুরাদকে।
তার এসব বক্তব্যের সমালোচনায় সোচ্চার হয়েছিলেন নারী অধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। খোদ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্য থেকেও মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবিও উঠেছিল। যার প্রেক্ষিতে সোমবার রাতে এসে প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনার কথা জানালেন ওবায়দুল কাদের।
উল্লেখ্য, মুরাদ হাসান নবম এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।
২০০৮ সালের ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে জামালপুর-৪ সংসদীয় আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ সংসদীয় আসন থেকে দ্বিতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য হন। ২০১৯ সালের ১৯ মে থেকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বরত তিনি।
জামালপুর জিলা স্কুল, নটর ডেম কলেজ এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন মুরাদ হাসান। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যান্সারবিজ্ঞান বিভাগে কনসালটেন্ট (পরামর্শক) হিসেবে কর্মরত আছেন।