অর্থপাচার করে স্বর্ণ আনে একটি চক্র
বিভিন্ন দেশের মুদ্রা বিদেশে পাচার করে এবং বিদেশ থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে নামী-দামি পণ্য এবং স্বর্ণ আমদানি করে একটি চক্র। সম্প্রতি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এমন একটি চক্রের কার্যক্রম নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অর্থ পাচার আইনে একটি মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। এতে অভিযুক্ত করা হয়েছে ৩ জনকে। তারা হলেন মুন্সিগঞ্জের রানা হাসান, একই জেলার মো. সাইদুজ্জামান ও বরিশালের মো. নাজমুল হাসান। এ চক্রের মাধ্যমে ৩১ হাজার ২০০ ইউরো, ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৫০০ দিরহাম, এবং ৮ লাখ ২০ হাজার সৌদি রিয়াদ পাচারের তথ্য পেয়েছে সিআইডি। যা বাংলাদেশী বর্তমান মুল্যে ৩ কোটি ৩০ লাখ ৭৪ হাজার ৭৩২ টাকা।
সিআইডি জানায়, রানা হাসান দীর্ঘ দিন যাবৎ বাহক হিসেবে কাজ করা বিভিন্ন মানুষদের দিয়ে বিদেশে মুদ্রা পাচার করেন। এছাড়া শুল্ক ফাকি দিয়ে নামী-দামি পণ্য এবং স্বর্ণ আমদানি করেন। ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল তিন দেশের ওই মুদ্রাগুলো রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে নাজমুল হাসানের মাধ্যমে কৌশলে থাইল্যান্ডে পাচার করে।
এ কাজে রানা হাসানের বন্ধু মো. সাইদুজ্জামানসহ অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজন বিদেশী এসব মুদ্রা বিমানবন্দরে পৌঁছে দিয়ে পাচারে সহায়তা করেন। নাজমুল হাসান মুদ্রগুলো নিয়ে থাইল্যান্ডে পৌঁছানোর পর তার কাছ থেকে মুদ্রাগুলো চুরি হয়ে যায়। এরপর মুদ্রাগুলো নিজের দাবি করে থাইল্যান্ড পুলিশের কাছে জিডি করেন। পরে আনোয়র হোসেন নামে এক বাংলাদেশিকে মুদ্রাসহ গ্রেফতার করে সে দেশের পুলিশ। এরপর নাজমুল মুদ্রাগুলো ফিরে পায়। এবং অভিযুক্ত বাংলাদেশীকে থাই আইনে ৬ মাসের সাজা দেয়া হয়েছিলো।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে সিআইডি আরও জানতে পারে নাজমুল হাসান টুরিস্ট ভিসায় থাইল্যান্ডে একাধিকবার যাতায়াত করেছেন। অভিযুক্ত সাইদুজ্জামান মূলত তাদের মুদ্রা পাচার ও অবৈধভাবে পণ্য আমদানিতে সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়া রানা হাসানের ব্যাংক হিসেব থেকে সাইদুজ্জামান একাধিকবার অর্থ উত্তেলন করেছে এমন তথ্যও পেয়েছে সিআইডি।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বর্তমানে অভিযুক্ত ২ জন দেশের বাইরে থাকলেও মো. সাইদুজ্জামান দেশে আছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে জানা যাবে এ চক্রর কার্যক্রমে আরও কারা জড়িত আছে। এছাড়া চক্রটি কী পরিমাণ অর্থ পাচার বা শুল্ক ফাঁকি দিয়ে পণ্য আমদানি করেছে সে বিষয়েও বিস্তারিত অনুসন্ধান করা হবে।
এ মামলার তদন্তের জন্য শীগ্রই থাইল্যান্ড পুলিশের কাছে তথ্য সিআইডির ফাইন্যন্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট তথ্য চাইবে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে সিআইডির মিডিয়া উইংয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজাদ রহমান বলেন, "থাইল্যন্ডে বিভিন্ন দেশের মুদ্রা পাচারের ঘটনায় একটি মামলায় হয়েছে। অভিযুক্তদের মাধ্যমে কী পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে এবং তাদের সাথে আরো কারা জড়িত আছে এ বিষয়ে তদন্তকার্যক্রম চলছে।"