বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সমন্বয় আনবে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব: আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপকমিটি
দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে গেছে। ৯৭ শতাংশের বেশি এলাকা বিদ্যুতের আওতায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন, যে ভিশন তিনি নিয়েছেন তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে হলে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে আরো উন্নত করতে হবে। তাই বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও তথ্যপ্রযুক্তি খাত একযোগে কাজ করলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়া সম্ভব।
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশের (আইইবি) হলরুমে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
"পাওয়ার, এনার্জি অ্যান্ড ডিপ লার্নিং অ্যাপ্লিকেশন্স ফর ফোর্থ আইআর ইন বাংলাদেশ" শিরোনামে এই সেমিনার আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ২০২২ আইইইই প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া টেক ইউনিভার্সিটির জোসেফ আর লরিং অধ্যাপক ড. সাইফুর রহমান। আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হােসেন মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপ-কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মাে. রনক আহসান। স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মােঃ আবদুস সবুর।
আলোচক হিসেবে ছিলেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম ও ২০২২ আইইইই ডব্লিউআইই কমিটি চেয়ার-ইলেক্ট এবং বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিয়া শাহনাজ।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, আমাদের এখন টেকসই উন্নয়ন ও ব্লু-ইকোনমিতে জোর দিতে হবে। বঙ্গোপসাগরে ইউরেনিয়াম পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। নবাগত গবেষকরা গবেষণা করে বের করবে, আমরা কীভাবে কাজে লাগাবো এই ইউরেনিয়াম। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে, খাদ্য উৎপাদন সক্ষমতা তিনগুণ হয়েছে। কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ সকল ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। এভাবেই বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব সময় বলে থাকেন, বাসা থেকে বের হওয়ার সময় লাইটটা অফ করবেন। কাজ শেষ হলে চুলাটা অফ করবেন। এটি হলো; অপচয়রোধে মানুষের ব্যবহারিক অভ্যাস গড়ে তোলা। আমরা এখন ছুটির দিনেও গাড়ি নিয়েও বের হয়ে যাই। অথচ আমরা যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে সপ্তাহে একদিন হাঁটা বা পাবলিক বাস ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলি তাহলেই ধরিত্রীকে রক্ষা করতে পারব।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু দায়িত্ব নেয়ার সময় বাংলাদেশ বিরাণভূমি ছিলো। সেখান থেকে তিনি দেশ গড়ার কাজ শুরু করেন। '৭৪ সালে মেরিটাইম অ্যাক্ট করেন। তার সেই দূরদর্শিতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন শেখ হাসিনা তিনি আরো বলেন, মাক জাকারবার্গ, বিল গেটস টাকা নিয়ে শুরু করেননি। তারা আইডিয়া নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। আইডিয়া থাকলে টাকার জন্য অভাব হয় না। এসময় জ্ঞানভিত্তিক ও গবেষণাধর্মী সেমিনার আয়োজন করায় আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটিকে ধন্যবাদ জানান তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।
মূল প্রবন্ধকার অধ্যাপক ড. সাইফুর রহমান বলেন, পাওয়ার ও এনার্জী পলিসি প্রনয়নের সময় পাঁচটি বিষয়ে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। যন্ত্র ও মানুষের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে, শক্তি সংরক্ষণ করতে হবে, অপচয় রোধ করতে হবে, ক্রস বর্ডার এনার্জি শেয়ারিং করতে হবে, নবায়নযোগ্য শক্তি যেমন সৌরবিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ ও পারমাণবিক শক্তির উপর জোর দিতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রকৌশলী মোঃ আবদুস সবুর বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আমাদের প্রচুর সম্পদ আছে, সুযোগও আছে। তথ্য-প্রযুক্তিতেও আমাদের অসাধারণ উন্নতি হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও তার সুযোগ্য আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে শুধু ইকোনমিক ও পলিটিক্যাল ডিপ্লোমেসি নয়, সায়েন্স ডিপ্লোমেসি ও টেকনোলজিক্যাল ডিপ্লোমেসিতেও আগামী দিনে বাংলাদেশ বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে।