পোষা শিয়ালের জন্য কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন গৃহবধূ
এক বছর যাবত গৃহবধূর বাড়িতে পোষা হচ্ছিল একটি খেঁকশিয়াল। এরই মধ্যে অনেকটা বড় হয়ে ওঠে শিয়ালটি। তবে খাঁচায় বন্দী শেয়ালের খবর পেয়ে ওই গৃহবধূর বাড়ি থেকে শিয়ালটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে বন বিভাগ।
দীর্ঘদিন নিজের সন্তানের মতো পালিত শিয়ালকে হঠাৎ করে বনবিভাগের লোকজনের গিয়ে নিয়ে আসাকে মেনে নিতে পারেননি এই গৃহবধূ। তাই নিজের পোষা শেয়ালের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় পর্যন্ত ছুটে আসেন ওই নারী। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে দুই শিশু সন্তানসহ কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।
নিজেদের খেলার সাথী শিয়ালকে হারিয়ে ওই নারীর দুই প্রতিবন্ধী শিশুও কান্না করতে থাকে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বন বিভাগের কর্মকর্তারা নারীকে বুঝিয়ে তার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর ফলকন গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামানের নিকট খবর আসে হাজিরহাট সংলগ্ন ফলকন গ্রামে বেদে বধূ হাসিনার বাড়িতে খাঁচাবন্দী অবস্থায় একটি শিয়াল আছে।
এমন খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে শুক্রবার দুপুরে বনবিভাগের লোকজন গিয়ে ওই গৃহবধূরর বাড়ি থেকে খাঁচায় বন্দী শেয়ালটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
পালিত শিয়াল হারানোর শোক সামলাতে না পেরে ওই নারীও বনকর্মকর্তাদের পিছনে পিছনে ছুটে আসেন উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে। এসময় ওই নারীর প্রতিবন্ধী দুই শিশুও ছুটে আসে।
গৃহবধূ জানান, এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২টি শিয়াল শাবক কিনে পালন করছিলেন তিনি। শিয়ালগুলো তখন খুব ছোট ছোট ছিল। কিন্ত কয়েক দিন পর একটি শাবক মারা যায়। পরে বাকি একটিকে তিনি লালনপালন করে বড় করে তোলেন। তার দুই প্রতিবন্ধী শিশু ওই শিয়ালটির
বন্ধু হয়ে ওঠে। কিন্ত হঠাৎ করে তাদের খেলার সাথীকে নিয়ে আসার পর শিশুদুটি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান ও উপজেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদের জানান, খাঁচায় বন্দী করে বন্যপ্রাণী লালনপালন করা অপরাধ। তাই শেয়ালটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে অবমুক্ত করা হবে।