সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের তীব্র সমালোচনা বিরোধীদলীয় সাংসদদের
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের তীব্র সমালোচনা করে বিরোধী দলের সদস্যরা জাতীয় সংসদে বলেন, এই আইনের কারণে তারা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছেন না।
মঙ্গলবার 'চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বিল-২০২২' শীর্ষক আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টি ও বিএনপির তিন সংসদ সদস্য বিষয়টি তুলে ধরেন।
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়ে নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত কোনো ব্যক্তি যদি (ক) সেই দল থেকে পদত্যাগ করেন অথবা (খ) সংসদে সেই দলের বিরুদ্ধে ভোট দেন তাহলে তার আসন শূণ্য হবে। কিন্তু সংসদ সদস্য হিসেবে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য তিনি অযোগ্য ঘোষিত হবেন না।
এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু প্রশ্ন তোলেন সংসদের এত ক্ষমতা আছে কি না?
তিনি বলেন, "সব ক্ষমতা সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাদের হাতে। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কিছু বলার ক্ষমতা কি কারো আছে?"
কেউ কি তার দলের বিরুদ্ধে কথা বলে এমপি হিসেবে থাকতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্ন তোলেন তিনি।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব চুন্নু বলেন, "যতদিন সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ থাকবে ততদিন সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা থাকবে না।"
তিনি আরও বলেন, "বাজেট আলোচনায় সংসদ সদস্যদের অংশগ্রহণ নেই। স্বাধীনভাবে কথা বলার সুযোগ নেই।"
বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে সংসদ সদস্যদের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেছেন, সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের কাছ থেকে তিনি জানতে পেরেছেন যে পাকিস্তানের অভিজ্ঞতার আলোকে সংবিধানে ৭০ অনুচ্ছেদ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
শামীম বলেন, "পাকিস্তান সৃষ্টির পর এমপিরা বিক্রি হয়ে গেছে। এই অভিজ্ঞতা থেকেই বাংলাদেশের সংবিধানে ৭০ অনুচ্ছেদ অন্তর্ভুক্ত করা হয়।"
তিনি আরও বলেন, "এখন বাস্তবতা হচ্ছে দলের বিরুদ্ধে কিছু বলা যায় না, দলের বিরুদ্ধে ভোট দেয়া যায় না। ফলে সংসদে জনগণের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটছে না।"