এডিপি: পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে দ্বিগুণ বরাদ্দের প্রস্তাব
আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) সর্বোচ্চ ২৮.৭৩% বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে। মূলত দেশের পরিবহন অবকাঠামো উন্নয়নে চলমান বেশ কিছু মেগা প্রকল্পকে গুরুত্ব দিয়ে এ খাতের সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে বলে পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, সড়ক, রেল ও বন্দর অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের মধ্যে কর্ণফুলি টানেল, মেট্রোরেল (এমআরটি-৬), যমুনা রেল সেতু, পদ্মা রেল সংযোগ, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দর প্রকল্প বাস্তবায়নের সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। এ কারণে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে চলতি অর্থবছরের এডিপি বরাদ্দের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিপিতে।
চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৫৫,৮২৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির তুলনায় প্রস্তাবিত এডিপিতে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতের বরাদ্দ বেড়েছে ১৪,৮৬৮ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিপির ৭০,৬৯৫ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে। আগামী অর্থবছরের জন্য সরকার ২৪৬,০৬৬ কোটি টাকার এডিপির আকার নির্ধারণ করছে।
পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে আগামী এডিপিতে বরাদ্দ বাড়লেও চলতি অর্থবছরের এডিপির তুলনায় বরাদ্দ কমছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। এছাড়া শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতেও প্রস্তাবিত এডিপিতে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
খাতভিত্তিক এডিপি বরাদ্দ চূড়ান্ত করতে পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত কমিটির সভা আহ্বান করা হয়েছে আগামী ১১ মে। এরপর নতুন এডিপি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় (এনইসি), যা আগামী ১৭ মে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা।
পরিকল্পনা বিভাগের সচিব ও পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের সদস্য প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী টিবিএসকে বলেন, মন্ত্রণালয়গুলোর চাহিদা অনুযায়ী খাতভিত্তিক বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে পরিকল্পনা কমিশন। এতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ অবকাঠামো খাত। এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বেড়েছে। তবে পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভায় এবং এনইসি সভায় বরাদ্দ পরিবর্তনও হতে পারে।
পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, চলতি অর্থবছরের এডিপিতে স্বাস্থ্য খাতে এডিপির বরাদ্দ ছিল ৭.৬৮%, আর প্রস্তাবিত এডিপিতে এ খাতের বরাদ্দ সামান্য বাড়িয়ে ৭.৮৩% করা হয়েছে। শতাংশের হিসাবে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ উল্লেখযোগ্যভাবে না বাড়লেও টাকার অংশে ১০,৮২০ কোটি টাকা বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির তুলনায় আগামী অর্থবছরের এডিপিতে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ বেড়েছে ৫,৪৮০ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত এডিপিতে শিক্ষা খাতের বরাদ্দ বাড়িয়ে ১১.৮২% করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের এডিপির তুলনায় আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত এডিপিতে শিক্ষা খাতের বরাদ্দ বেড়েছে প্রায় ৩৬.৪৮%।
তবে চলতি অর্থবছরের মূল এডিপিতে শিক্ষা খাতে ১০.২৯% বরাদ্দ দেওয়া হলেও সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ কমিয়ে ৩.৮১% করা হয়।