ঢাকা- খুলনায় বেড়েছে গণপরিবহন, উচ্ছ্বসিত যাত্রীরা
যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে পদ্মা সেতু। রোববার (২৬ জুন) ভোর ৬টা থেকে সব ধরনের যান চলাচল শুরু হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত এ স্থাপনার ওপর দিয়ে।
খুলনা থেকে রাজধানী ঢাকাতে প্রতিদিন যাতায়াত করে হাজার হাজার মানুষ। মাওয়া ঘাটের সেই চিরচেনা ফেরী পারাপারের ভোগান্তি ছাড়াই আজ ঢাকা পৌঁছাবে খুলনার মানুষ। এ যাত্রায় স্বস্তির উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। এছাড়া এই রুটে পরিবহনের সংখ্যাও বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
খুলনার রয়েল মোড়ে রয়েছে ঢাকাগামী গণপরিবহনের প্রায় ২০টির বেশি কাউন্টার।
সকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায় ধারাবাহিকভাবে পরিবহনগুলো ছেড়ে যাচ্ছে রাজধানীর উদ্দেশে।
ইমাদ পরিবহনের রয়েল মোড় কাউন্টারের ম্যানেজার শরীফ আল মামুন বলেন, 'খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশে ২৩ বাস ছেড়ে যায়। পদ্মা সেতু চালু উপলক্ষে আরও ২ বাস বাড়ানো হয়েছে। আগামী দুই দিন আমরা পরীক্ষামূলকভাবে দেখবো। যাত্রী বাড়লে বাসও বাড়াবো।'
তিনি জানান, ঢাকা-খুলনা রুটে যাত্রীপ্রতি তাদের পরিবহন ভাড়া এসিতে ৭০০ টাকা ও নন-এসিতে ৬০০ টাকা।
তিনি বলেন, 'আজ সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে প্রথম বাস খুলনা থেকে ছেড়ে গেছে। একই সময়ে ঢাকা থেকে খুলনার উদ্দেশে বাস ছেড়ে এসেছে।'
সোহাগ পরিবহনের রয়্যাল মোড় কাউন্টারের সহকারী ম্যানেজার মো. বুলবুল বলেন, 'ঢাকা-খুলনা রুটে আমাদের আগে দুটি পরিবহন চলাচল করতো। এখন ১৫ পরিবহন বাড়ানো হয়েছে। তার মধ্যে এসি বাস ৫টি ও নন-এসি বাস ১০ টি। এখন ঢাকা-খুলনা রুটে মোট ১৭টি বাস চলাচল করছে।'
তিনি জানান, ঢাকা-খুলনা রুটে যাত্রীপ্রতি তাদের পরিবহন ভাড়া এসি বাসে ১২০০ টাকা ও নন-এসি বাসে ৬০০ টাকা।
তিনি বলেন, 'আজ সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে আমাদের প্রথম নন-এসি বাস ছেড়ে গেছে। এছাড়া ৮টা ১৫ মিনিটে প্রথম এসি বাস ছেড়ে গেছে। দুটি বাসের যাত্রীর সংখ্যা ছিল আগের থেকে তুলনামূলক বেশি।'
এছাড়া অন্তত ১০টি পরিবহনের কাউন্টারে গিয়ে কথা বলে জানা গেছে ঢাকা-খুলনা রুটে প্রায় সব পরিবহন ব্যবসায়ীরা গাড়ি বাড়িয়েছেন।
নন-এসি বাসে সকল গণপরিবহনের ভাড়া ৬০০ টাকা ধরা হলেও, এসি বাসে ৭০০ টাকা থেকে শুরু করে ১২০০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া গেছে।
এদিন সকালে খুলনা থেকে ঢাকাগামী প্রায় সব যাত্রী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
আশরাফ উদ্দীন নামের এক যাত্রী বলেন, 'আমি ব্যবসায়িক কাজে ঢাকা যাচ্ছি। পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে যাওয়ার শখ ছিল। তা আজ পূরণ হবে।'
আজগর আলী নামের আরেক যাত্রী বলেন, 'পদ্মা সেতু চালু হওয়ার প্রথম দিনই ঢাকাতে যাচ্ছি। অন্যান্য দিন ঢাকাতে যেতে ৭ ঘণ্টার মতো লাগতো। আজ হয়তো সাড়ে তিন বা চার ঘণ্টা লাগবে। এটা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য বড় পাওয়া।'
খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সোনা বলেন, 'খুলনা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী নন-এসি বাসের ভাড়া সবাই মোটামুটি বিআরটিসির ভাড়ার কাছাকাছি রেখেছে। তবে এসি বাসের ভাড়া সরকার নির্ধারণ করে দেয় না। এটা বাসমালিকরা নির্ধারণ করে।'
'আমরা সকল বাস মালিকদের জানিয়েছি, কেউ যেন অতিরিক্ত ভাড়া না আদায় করে।'
পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচলকারী দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যের ১২ রুটের যাত্রীবাহী বাসসহ যানবাহনগুলোর ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে মাওয়া হয়ে খুলনার দূরত্ব ২০৭ কিলোমিটার হওয়ায় এ রুটে ভাড়া ধরা হয়েছে ৫৩৭ টাকা। তবে কাউন্টারগুলো নন-এসি বাসে ভাড়া নির্ধারণ করেছে ৬০০ টাকা।