কী করছেন জয়া আহসান
পৃথিবীব্যাপি করোনো সংক্রমণের এই সময়ে অন্য সবার মতো তারকারাও ঘরবন্দি। ব্যতিক্রম নন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় পরিবারের সঙ্গে আছেন তিনি।
তবে ঘরে বন্দি থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব জয়া। প্রায় নিয়মিতই ছাদ বাগানের নানা ধরনের সবজি আর মায়ের হাতের বানানো নানা খাবারের ছবি দেন ফেসবুকে। ভক্তদের কমেন্ট আর রিঅ্যাকশন বেশ উপভোগ করেন। মাঝে মধ্যে আপলোড করেন নিজের ছবিও।
এই করোনাকালেও তিনি কদিন আগে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। একটি তার অভিনীত কলকাতার ছবি 'রবিবার'- এর একটি পুরস্কার এবং অন্যটি রাস্তার কুকুরদের নিজ হাতে খাওয়ানোর ছবি ভাইরাল হওয়ার মাধ্যমে।
এসব নিয়েই দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। শুরুতেই জানান, সমালোচক চয়েজ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস প্রতিবছর ভারতে দেওয়া হয় দেশটির ফিল্ম ক্রিটিকস গিল্ড থেকে। নির্বাচকদের মধ্যে রয়েছেন সে দেশের প্রথম সারির সংবাদপত্র, বেতার ও ওয়েবসাইটের সমালোচকেরা।
সেখানেই পুরস্কার ও প্রশংসা পেয়েছে জয়া আহসান ও প্রসেনজিত অভিনীত ছবি 'রবিবার'। ছবিটি পরিচালনা করেছেন অতনু ঘোষ। সম্প্রতি ছবিটি বাংলাদেশেও মুক্তি পেয়েছে। তবে করোনার কারণে বন্ধ রয়েছে প্রদর্শনী।
প্রদর্শনী বন্ধ থাকলেও ঠিকই পুরস্কারের বাগিয়ে নিয়েছে 'রবিবার' টিম। সেরা কাহিনি ও সেরা পরিচালনার পুরস্কার পেয়েছে চলচ্চিত্রটি।
এমন আনন্দের সংবাদ নিয়ে কথা জয়া বলেন, "অবশ্যই ভালো লাগছে। তবে এমন একটা সময়ে পুরস্কার পেল, যেটা আসলে কঠিন সময় আমাদের জন্য। 'রবিবার' অনেকগুলো পুরস্কার পেয়েছে, তবে এবারের পুরস্কারটা আলাদা। কারণ যারা পুরস্কারটি দিয়েছেন, তারা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরি বোর্ডের সদস্য। তাদের হাত থেকে দুটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জিততে পারা ছোট ব্যাপার নয়। তবে আমি বলব, এটি সাধারণ দর্শকদের ছবি নয়। এটি এক অর্থে দর্শককে চ্যালেঞ্জ করে- এমন ছবি। সব দর্শক এটাতে কানেক্ট করতে পারবে বলে মনে হয় না।"
জয়া কথা বলেন এই সময় মানুষদের পাশে না দাঁড়ানোর ব্যাপারটি নিয়েও। তিনি বলেন, 'আমি অত সামর্থবান নই। আমি নীরবে কিছু করার চেষ্টা করছি। আর এই সময় পুরোপুরি হোম কোয়ারেন্টিনে আছি। আসলে একটা কঠিন সময় পার করছি আমরা। এই সময় প্রোডাকটিভ কিছু করার ইচ্ছা ছিল। যেমন, সিনেমা দেখা বা বই পড়া। কিন্তু কিছুই করতে পারছি না। একেবারে মনোসংযোগ করতে পারছি না।'
তিনি বলেন, 'সামনের দিনগুলি কেমন কাটবে- এটা ভেবে খুব উদ্বিগ্ন। বাগান করছি, বাড়িতে সময় দিচ্ছি। আগে বাড়িতে সময় দিলেও সেটা খুব কোয়ালিটি টাইম দিতাম। কিন্তু এখন সেটা হচ্ছে বলে মনে হয় না।'
এই অস্থিরতার কারণে বেশ কিছু সিডিউল জটিলতায় পড়েছেন তিনি। অনেকগুলো কাজের কথা ছিল। শুটিং, ডাবিং নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করার কথা ছিল এই সময়ে। কিন্তু আটকে আছে করোনার কারণে।
তবে এই লকডাউনের সময়ে জয়া আহসানকে দেখা যায় রাস্তায় কুকুদের খাবার খাওয়াতে। তার ভাই অদিত মাসউদের ফেসবুকের মাধ্যমে এরইমধ্যে তার ভক্তরা জেনে গেছেন, এই সময়ে প্রায়ই রাস্তার কুকুরদের খাওয়াতে যান তিনি।
চলমান লকডাউনের কারণে সড়কের কুকুরগুলো পাচ্ছে না পর্যাপ্ত খাবার। এই চিন্তা থেকেই নিজ হাতে রান্না করে নিয়ে যান কুকুরদের জন্য। নগরীর দিলুরোড, ইস্কাটন গার্ডেন ও মগবাজার এলাকার বিভিন্ন স্থানে পরম আনন্দ নিয়ে নিজ হাতে খাওয়ান তিনি।
২৭ মার্চ থেকে শুরু করে টানা পাঁচদিন জয়া আহসান একইভাবে একই স্পটে একই সময়ে ছুটেছেন খাবার নিয়ে। জানা গেছে, এভাবেই ছুটবেন লকডাউনের বাকি দিনগুলো।
তবে এসব নিয়ে একেবারেই কথা বলতে নারাজ জয়া। তবে ফেসবুকের কল্যাণে তার ভক্তরা নিশ্চয় অবগত আছেন, জয়া আহসানের ক্লিওপ্রেট্টা নামে একটা কুকুর আছে। অবসরে যার সঙ্গে দারুণ সময় কাটে জয়ার। তাই, পশু-পাখির প্রতি এই অভিনেত্রীর ভালোবাসা নতুন নয়।
আলাপ শেষ করার আগে জয়া বললেন, 'আমি আসলে টেনশনে আছি এই সময়টা নিয়ে। করোনার যে সময়টা আমরা পার করছি, এই যুদ্ধটা আমরা জিততে পারব কি না? বাংলাদেশ জিতবে কি না- এটাই এখন বড় চিন্তার বিষয়।'