ভুল থেকে শিখেছি, এটাই অর্জন: মিথিলা
কলকাতার জনপ্রিয় পরিচালক সৃজিতের সঙ্গে বিয়ের এক বছর পার করেছেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী ও গায়িকা রাফিয়াত রশীদ মিথিলা। এরমধ্যে অবশ্য পাকাপাকিভাবে সংসার করেছেন চার মাস। তাও এই করোনাকালে।
বছরের শেষদিকে দেশে এসেছিলেন মিথিলা। বছর শেষ হওয়ার দুদিন আগে অবশ্য চলেও গেছেন।
যাওয়ার আগে কথা বলেছেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে।
মিথিলা বলেন, 'কলকাতায় সংসার করতে এসে যে সমস্যাটা হয়েছে তা হলো, আমি ওই শহরে নতুন। অনেক কিছু চিনি না। আমার আর আইরার সারাদিন বাসাতেই কেটেছে। মজার ব্যাপার হলো, করোনার মধ্যে সৃজিতও বাসায়। তাই আমাদের মধ্যে বন্ডিংটা আরও দৃঢ হয়েছে।'
'এই লকডাউনে আমার কাজ ছিল বাসাটা ঠিকঠাক সাজানো। চেষ্টা করেছি সেটা করতে। আমার গাছ খুব পছন্দের। তাই এ সময়টাতে আমি গাছ লাগিয়ছি। ৬২টা টবে নানা ধরনের ফুল, ফল ও সবজি ও ঔষধি গাছ লাগিয়েছি,' বলেন তিনি।
পাশাপাশি সৃজিতের বন্ধুদের বাসায় ডেকে আড্ডার ব্যবস্থা করেছিলেন মিথিলা। সেই ছাদবাগানে দেওয়া আড্ডার ছবি তার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম হয়ে এরইমধ্যে দেখেছেন অনেকেই। বলা যায়, এখন সৃজিতের বন্ধুরাই মিথিলার বন্ধু হয়ে উঠছেন।
বিয়ের এক বছর পূর্তিতে দুজন ঘুরতে গিয়েছিলেন সুন্দরবনে। দারুণ সময় কেটেছে সেখানেও। এক বছরের সংসার শেষে পরিচালক ও স্বামী সৃজিতকে নিয়ে মিথিলার মন্তব্য হলো, 'সৃজিত আগে বাসায় থাকত না। ভীষণ এলেমেলো জীবনযাপন করত। ও এখন সংসারী হয়েছে। আমাদের জন্য সময় বের করে। বের করতে না পারলে যে ওর খারাপ লাগে, সেটা বুঝি। আসলে ও ভীষণ ব্যস্ত থাকে, এটা তো দেখিই আমরা। আর খারাপ একটা দিক হলো, একেবারেই এক্সারসাইজ করে না, ডায়েট করে না। সেটাতে ওকে অভ্যস্ত করার চেষ্টা করছি।'
সাংবাদিকরা তো বটেই, পরিচিত অনেকেই প্রশ্ন করেন, সৃজিতের ছবিতে তাকে দেখা যাবে কি না। এই প্রশ্বে স্বভাবতই ব্রিবত হন মিথিলা। 'এই প্রশ্নটা আমার জন্য সত্যিই বিব্রতকর। এটা অনেকেই করেন। আমার স্বামী ডিরেক্টর মানেই তার সব ছবিতে আমি অভিনয় করব, এমনটা নয়। চরিত্রের প্রয়োজন হলে তবেই হয়তো করব। আমি আলাদা করে এ নিয়ে সৃজিতকে বলব না কখনোই,' বলেন তিনি।
তবে সৃজিতের ছবিতে না হলেও খুব তাড়াতাড়ি হয়তো কলকাতার সিনেমায় দেখা যেতে পারে মিথিলাকে। এ রকম ইঙ্গিত দিলেন তিনি। বললেন, 'বেশ কয়েকজনের সাথে কথা হচ্ছে, হয়তো খুব তাড়াতাড়ি জানিয়ে দিব সবাইকে।'
কয়েকদিনের জন্য দেশে এসে 'কনট্রাক্ট' নামে একটি ওয়েব সিরিজে অভিনয় করে গেলেন মিথিলা। মিরপুরসহ ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় হলো শুটিং। কথার ফাঁকে জানালেন, অভিনয়ের ১৫ বছর পার করেছেন তিনি। নিজের একটা আলাদা পেশা আছে, তারপরও ছুটির দিনগুলো মিলিয়ে চেষ্টা করেছেন অভিনয় করার। কাজও করেছেন কম। তবে যা-ই করেছেন, দর্শকেরা উপভোগ করেছে।
নিয়মিত কাজ না করার জন্য কী খারাপ লাগে? এমন প্রশ্নের জবাবে মিথিলা বলেন, 'একেবারে যে আফসোস হয় না, তা কিন্তু নয়। অনেক ভালো ভালো চিত্রনাট্য হাতে পেয়েও কাজ করতে পারিনি। তবে যতগুলো কাজ করেছি, আমি তৃপ্ত। আমার কাছে মনে হয়, গত ১৫ বছরে যেসব পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছি, তারাও নিশ্চয় বলবেন, চরিত্রটা ঠিকঠাক করতে পেরেছি। হয়তো সময় পেলে আরও কাজ করতে পারতাম।'
এই যে প্রচুর কাজ করতে না পারার দুঃখ, একই রকম জীবনের কোনো ভুল বা দুঃখ কি মিথিলাকে কষ্ট দেয়?
মিথিলা এক মুহূর্ত ভাবলেন। তারপর জানালেন, 'ভুল থেকে আমি শিখেছি। এটাই আমার গত ১৫ বছরের অর্জন। বলতে পারেন এটাই সফলতা। এটাকে সঙ্গী করে সামনে এগিয়ে যেতে চাই।'