দুই বাংলায় দুই ছবি, তানজানিয়া থেকে কী বললেন মিথিলা?
প্রথমবার রাফিয়াথ রশীদ মিথিলার ছবি মুক্তি পেয়েছে বড় পর্দায়। তাও দুই বাংলায় একসঙ্গে দুটি ছবি। স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছসিত মিথিলা। কিন্তু মিথিলা দুটি ছবির প্রচারণায় নেই। পেশাগত কারণে আছেন দুর দেশ তানজানিয়ায়। সেখান থেকেই অনলাইনে প্রচার চালাচ্ছেন ছবির।
গত সপ্তাহে বাংলাদেশে মুক্তি পেয়েছে মিথিলা অভিনীত ও অনন্যা মামুন পরিচালিত ছবি 'অমানুষ'। আর পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পেয়েছে সৌভিক কুন্ডু পরিচালিত 'আয় খুকু আয়'।
ছবি দুটি নিয়ে তিনি বলেন, "দুটি ছবি একসঙ্গে দুটি দেশে মুক্তি পেয়েছে এটা আমার জন্য খুব আনন্দের। যদিও 'আয় খুকু আয়' ছবিতে আমি গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্স করেছি। কিন্তু সেটাও খুব স্পেশাল। এদিকে 'অমানুষ' আমার প্রথম শুটিং করা চলচ্চিত্র। এখানে চরিত্রটাও খুব ভালো।"
দুটি ছবির কাজের ধরন প্রসঙ্গে এই অভিনেত্রী অনলাইনে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "'আয় খুকু আয়' ছবিতে অল্প সময়ের জন্য শুটিং করেছি। বোলপুরে শুটিং হয়েছে। তবে কলকাতায় যেটা হয়, খুব গোছানো কাজ হয়েছে। বাংলাদেশে যেটা হয়, খুব চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমাদের কাজ করতে হয়। আমরা সব ম্যানেজ করে নেই। বাজেটটা কম ছিলো, কিন্তু আমাদের টিমটা খুব ভালো। এ কারণে কাজের ধরনটা আলাদা।"
এরইমধ্যে অমানুষ সিনেমা ৪০টি সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে। দর্শকের সাড়াও পড়েছে বেশ। তানজানিয়া থেকে সে খবর তিনি পাচ্ছেন নিয়মিত।
মিথিলা সেই খবর জানিয়ে বললেন, "আসলে সিনেমাটা দর্শকেরা দেখলে আমাদের খুব ভালো লাগবে। কারণ সিনেমাটি শুটিং এ সত্যি আমরা খুব পরিশ্রম করেছি। সারাদিন জঙ্গলে শুটিং। আবার যখন শুটিং করি তখন দেশে লকডাউন শুরু হয়েছে। আমরা শুটিংয়ে যাওয়ার পর জানতে পারি লকডাউনের ঘোষণা। তাই অল্প কিছু কাজ করে ফিরে আসতে হয়েছে। কিছু অংশ বান্দরবান এবং কিছ অংশ গাজীপুরে জাতীয় উদ্যানে শুটিং করা।"
সিনেমায় বাজটে খুব বেশি ছিল না। এটা পরিচালক জানিয়েছেন। এইরমধ্যে অবশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচালক অনন্যা মামুন জানিয়েছেন, অমানুষ ছবির বাজেটের টাকা ওটিটি, টেলিভিশন রাইটস এবং স্পন্সরের মাধ্যমে উঠে এসেছে। এখন সিলেটে বন্যাদূর্গতের জন্য ফান্ড গঠন করা হয়েছে। ঘোষণা দেওয়া হয়েছে মুক্তির এক সপ্তাহে টিকিট বিক্রির টাকা সিলেটের বন্যদূর্গতের জন্য দেওয়া হবে।
মিথিলা বলেন, "আমাদের সিনেমার বাজেটের চেয়ে আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো চরিত্র। সেটা আমার কাছে অমানুষে ঠিকঠাক ছিল তাই কাজটা করে ভালো লেগেছে।"
মিথিলা ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্টের প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন। এখন পেশাগত কারণেই আছেন তানজানিয়ায়। জানতে চাই, চাকরির পাশপাশি অভিনয় করছেন। কখনো কি মনে হয় যে ফুলটাইম অভিনেত্রী হলে ভালো হতো?
তিনি বলেন, "আমি ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই চাকরির পাশাপাশি অভিনয় করে যাচ্ছি। ১৪ বছর হলো ব্র্যাকে কর্মরত। আর ১৬-১৭ বছর হলো অভিনয় করছি। কখনো মনে হয়নি ফুল টাইম অভিনয় করলে আরও অনেক কাজ করা যেতো। অনেক চরিত্র প্লে করা যেতো। নিজেকে এক্সপ্লোর করতে পারতাম। অভিনয়ের স্ক্রিলটা আরও ভালো হতো পারতো।"
"সমস্যা হলো, আমি একই কাজ অনেকদিন ধরে করতে পারি না। একঘেয়ে লাগে। আমি চাকরিটা যে করছি এটা আমার প্যাশনের জায়গা থেকে করা। অভিনয়ও তাই। দুটোই যে একসঙ্গে করতে পারছি এটাই আমার ভাগ্য। আমি আসলে এই বিষয়গুলো নিয়ে উচ্চাকাঙ্খী নই। জীবনে যা পেয়েছি আমি সন্তুষ্ট।"
তবে সামনে কাজগুলো নিয়ে কথা বলেন এই অভিনেত্রী। জানালেন, কলকাতায় এখন নীতিশাস্ত্র অ্যান্থোলজি ফিল্মের কাজ শেষ করেছেন। শীগগিরই রিলিজ হবে। এছাড়া রাজর্ষী দে পরিচালিত 'মায়া' রিলিজের অপেক্ষায় আছে।
বাংলাদেশে গিয়াসউদ্দিন সেলিমের 'কাজলরেখা' সিনেমার প্রথম লটের শুটিং শেষ হয়েছে। এছাড়া সরকারি অনুদানের ছবি 'জ্বলে জ্বলে তারা' এর ডাবিং শেষ করেছেন। ছবিটি পরিচালনা করেছেন অরুন চৌধুরী। সেটিও আছে মুক্তির অপেক্ষায়।