আত্মহত্যা নয়, খুন হয়েছিলেন সুশান্ত! দাবি মর্গকর্মীর
আড়াই বছর কেটে গেলেও সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর রহস্য কাটেনি আজও। সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সুশান্তের মামলা নিয়ে গণমাধ্যমে মুখ খুলেন ময়নাতদন্তের সময়ে উপস্থিত থাকা হাসপাতালের এক কর্মী। তিনি জানান, সুশান্ত আত্মহত্যা করেননি; তাকে হত্যা করা হয়েছিল। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
ভারতীয় গণমাধ্যমকে কুপার হাসপাতালের কর্মী রূপকুমার শাহ বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য যখন সুশান্তকে হাসপাতালে আনা হয়, তখন তার গলায় এবং দেহে একাধিক ক্ষতের দাগ ছিল। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সে কথা তিনি জানিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তখন তাকে 'নীতি' মেনে কাজ করার নির্দেশ দেন।
রূপকুমারের দাবি, মৃতদেহ দেখেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, এটি আত্মহত্যা নয়।
হাসপাতালের কর্মীর এমন দাবির পর, এ নিয়ে এবার গণমাধ্যমে মুখ খুললেন প্রয়াত অভিনেতার আইনজীবী।
সুশান্ত সিং রাজপুত-মামলার দায়িত্বে থাকা আইনজীবী বিকাশ সিং জানান অভিনেতার দেহে থাকা আঘাত সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।
তিনি বলেন, "আমি এই ব্যাপারে কিছু বলতে পারছি না, কারণ ওর বোনেরা আমাকে এ নিয়ে কিছুই বলেনি। কিন্তু আমি এখনও বলব সুশান্তের মৃত্যু কোনো সাধারণ আত্মহত্যার ঘটনা নয়। এর পিছনে ছিল বড় ষড়যন্ত্র, যা একমাত্র সিবিআই-ই খুঁজে বের করতে পারবে।"
এদিকে রূপকুমার শাহ গণমাধ্যমকে আরও বলেন, "ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারি, দেহটি সুশান্তের। তার সারা গায়ে বেশকিছু চিহ্ন ছিল। আর গলা-ঘাড়ের কাছেও তিনটি দাগ ছিল। মৃতদেহের ময়নাতদন্তের ভিডিও রেকর্ড হওয়ার কথা। কিন্তু উচ্চপদস্থরা বলেন, শুধু স্টিল ছবিই তোলা হবে। আমরা সেভাবেই কাজটি করি।"
রূপকুমারের দাবি, তিনি দেখেই বুঝতে পেরেছিলেন এটি আত্মহত্যা নয়, খুন। আর তা তিনি জানিয়েছিলেন নিজের উচ্চপদস্থকে। কিন্তু তার ঊর্ধ্বতন তাকে নির্দেশ দেয়, দ্রুত ছবি তুলে কাজ সেরে মৃতদেহ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে।
২০২০ সালের ১৪ জুন নিজের ফ্ল্যাটেই ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় সুশান্ত সিং রাজপুতের দেহ। এই খবর বেশ হৈচৈ ফেলেছিল গোটা ভারতে। সুশান্ত আত্মহত্যা করেছিলেন- এ কথা এখনও অনেকেই বিশ্বাস করেন না। যদিও ময়নাদতন্তে এটিকে আত্মহত্যা বলেই ঘোষণা করা হয়েছে।
অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন তদন্ত নিয়ে; কেন ময়নাদতন্তের কোনো ভিডিও ফুটেজ নেই, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠেছে। সুশান্তের পরিবারের পক্ষ থেকে এফআইআর দায়ের করা হয়। যাতে নাম রয়েছে সুশান্তের তৎকালীন বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর। আপাতত এই মামলার দায়িত্বে রয়েছে সিবিআই, এনসিবি ও ইডি। মাদক ও আর্থিক তছরুপের ঘটনাও জড়িয়ে রয়েছে সুশান্তের কেসের সঙ্গে।