১৪ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দেশের বাইরে ইরানি চলচ্চিত্র নির্মাতা জাফর পানাহি
দীর্ঘ ১৪ বছরের অপেক্ষার অবসান, মুক্তির স্বাদ পেলেন প্রখ্যাত ইরানি চলচ্চিত্র নির্মাতা জাফর পানাহি। ২০০৯ সালে ভিন্নমতাবলম্বী এই নির্মাতার ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর এই প্রথম তিনি দেশের বাইরে পা রেখেছেন বলে খবর ডেডলাইন-এর।
জাফর পানাহির স্ত্রী তাহেরাহ সাইদি গত মঙ্গলবার ইনস্টাগ্রামে দুজনের বিমানবন্দরে দাঁড়ানো ছবি পোস্ট করেন। এসময় তাদের সঙ্গে ব্যাগ-লাগেজ দেখা যায় এবং ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ছিলেন জাফর পানাহি।
জাফর পানাহির স্ত্রীর এই পোস্টের ক্যাপশনে লেখা ছিল: "১৪ বছর পর জাফরের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং অবশেষে আমরা একসঙ্গে কিছুদিনের জন্য ভ্রমণে যাচ্ছি...।"
যদিও ছবিটি কোথায় তোলা হয়েছে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি, কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় গুঞ্জন রয়েছে যে তারা ফ্রান্সে গিয়েছেন।
'দ্য হোয়াইট বেলুন', 'ট্যাক্সি', 'দ্য সার্কল' এর মতো চলচ্চিত্রগুলো দরসশকদের উপহার দিয়েছেন জাফর পানাহি। কিন্তু ক্যারিয়ারের পুরো সময়টাই ইরানের স্বৈরাচারী ইসলামী প্রজাতন্ত্র সরকারের রোষানলে কাটাতে হয়েছে এই চলচ্চিত্র নির্মাতাকে।
ইরানের 'সবুজ বিপ্লব' এর সময় গুলিতে নিহত এক ছাত্রের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেওয়া এবং পরবর্তীতে এ ঘটনার পটভূমিতে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ায় তার ইরান ছেড়ে যাওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
২০১০ সালে 'রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর' অভিযোগে জাফর পানাহিকে ছয় বছরের স্থগিত কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং ২০ বছরের জন্য তার চলচ্চিত্র নির্মাণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
তবে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে থেকেই পানাহি ছয়টি চলচিত্র পরিচালনা করেন, এর মধ্যে রয়েছে- 'দিস ইজ নট আ ফিল্ম', 'ক্লোজড কার্টেইন', 'ট্যাক্সি', 'থ্রি ফেসেস' এবং 'নো বেয়ারস'।
গত বছরের জুলাইয়ে ইরানের আরও দুই চলচ্চিত্র নির্মাতা মোহাম্মদ রসুলফ ও মোস্তফা আল-আহমাদকে গ্রেপ্তারের পরপর জাফর পানাহিকেও গ্রেপ্তার করা হয়। মাস দুয়েক আগে তেহরানের কুখ্যাত এভিন কারাগার থেকে মুক্তি পান পানাহি।
পানাহি কারাগারে থাকাবস্থায়ই ইরানে 'উইমেন লাইফ ফ্রিডম' আন্দোলন জেগে ওঠে। ২২ বছর বয়সী কুর্দি নারী মাহসা আমিনি পুলিশি হেফাজতে থাকাবস্থায় মারা যাওয়ার পর ইরানজুড়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
জাফর পানাহিকে আসলেই দেশের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ডেডলাইন।