ভারতীয় সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি থেকে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যেসব বিখ্যাত হেয়ারস্টাইল!
ভারতীয় চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিকে প্রভাব রাখার মতো একটি চালিকাশক্তি বললে বোধহয় অত্যুক্তি করা হয় না। এই ইন্ডাস্ট্রির ব্যাপকতা, বৈচিত্র্য এবং সৌন্দর্য্য, স্টাইল ও ফ্যাশন ট্রেন্ড প্রজন্মের পর প্রজন্মকে প্রভাবিত করে এসেছে। এসব ফ্যাশনের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে চুলের স্টাইল। যখন বড় পর্দায় একটি অভিনব এবং ভিন্নধর্মী হেয়ারস্টাইল দেখে দর্শকরা, তারা সেটিকে লুফে নেয়। বলিউডের এমন অনেক হেয়ারস্টাইল বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় হয়েছে, এমনকি বাংলাদেশেও। ভোগ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে তেমনই কিছু বিখ্যাত হেয়ারস্টাইলের কথা তুলে ধরা হয়েছে যেগুলো জনপ্রিয় ট্রেন্ড তৈরি করেছিল।
বর্তমানের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার দাপট ছিল না যখন, সেই সময়েই পাড়ার সেলুনে বা বিউটি পার্লারে শোভা পেত বলিউডের বিখ্যাত তারকাদের হেয়ারস্টাইলের ছবি। ছোটবেলায় কোনো কোনো বন্ধুকে হয়তো আপনি সেই হেয়ারস্টাইল অনুকরণও করতে দেখেছেন। পঞ্চাশের দশকে সাধনা শিবদাসনির হেয়ারস্টাইল থেকে শুরু করে নব্বইয়ের দশকে রানী মুখার্জির হেয়ারব্যান্ড স্টাইল... একেক প্রজন্ম ঘুরেফিরে দেখেছে বলি-তারকাদের ফ্যাশন ট্রেন্ডের প্রভাব।
সাধনার 'ফ্রিঞ্জ হেয়ারকাট' (১৯৫৮)
'লাভ ইন শিমলা' বলিউডের এমন একটি চলচ্চিত্র যা ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মোড় ঘুরিয়ে দেয় এবং সোনিয়া চরিত্রে সাধনা শিবদাসনির বিখ্যাত 'ফ্রিঞ্জ হেয়ারকাট' বা কপালের ওপর ছোট চুল রাখার স্টাইল ছিল ছবিটি হওয়ার একটি কারণ! 'সাধনা কাট' নামে পরিচিত এই হেয়ারকাট 'লেস ইজ মোর'-এর গুরুত্ব আরও ফুটিয়ে তোলে। সেসময় অড্রে হেপবার্ন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই হেয়ারকাট দেওয়া হয়েছিল।
শর্মিলা ঠাকুরের ব্যুফো (১৯৬৬)
ভারি মেকাপ এবং লম্বা চুল ষাটের দশকের স্টাইল স্টেটমেন্ট হয়ে ওঠে। শর্মিলা ঠাকুর এই ট্রেন্ডে নতুন মাত্রা যোগ করেন ব্যুফো স্টাইলের মাধ্যমে। চুলকে ফুলিয়ে উঁচুতে গোলাকারভাবে বেঁধে, পাশে কিছু চুল ছেড়ে দেওয়া হয় এই স্টাইলে। সাথে মেকাপে থাকবে চোখে উইংগড বোল্ড আইলাইনার। এই হেয়ারস্টাইল ইন্ডাস্ট্রিজুড়ে রাজত্ব করে। ওয়াহিদা রহমান ও সায়রা বানুর মতো তারকারাও এটি অনুসরণ করেন।
ডিম্পল কাপাডিয়ার 'লেয়ারড ব্লোআউট' (১৯৮৯)
'রাম লক্ষণ' ছবিতে ডিম্পল কাপাডিয়ার ঢেউ খেলানো চুলের সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হননি এমন দর্শক পাওয়া কঠিন! বাউন্সি লেয়ারড ব্লোআউট ধাচের এই স্টাইলে চুলকে ঘন দেখায়। এর সঙ্গে গ্লসি লিপস্টিক- গোলাপি আভা রেখে লুক তৈরি করেছিলেন ডিম্পল। তার এই হেয়ারস্টাইল পরে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়।
কাজলের 'শর্ট বব' (১৯৯৮)
'কুচ কুচ হোতা হ্যায়' সিনেমায় কাজলের শর্ট বব হেয়ারকাট ফ্যাশন জগতে অলটাইম ক্লাসিক হিসেবেই প্রমাণিত হয়েছে। নব্বইয়ের দশকের শেষভাগে এবং এর পরের দশকেও তুমুল জনপ্রিয় ছিল এই হেয়ারকাট। ছবিটি যেমন ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল, তেমনই ছবিতে টমবয় রূপে কাজলকেও দর্শকরা ভীষণ পছন্দ করেছেন। গতানুগতিক স্টাইল থেকে বেরিয়ে ছিমছাম শর্ট বব হেয়ারকাটকে বেছে নিয়েছিল বিশ্বের লাখো কিশোরী-তরুণী।
রানী মুখার্জির 'হেয়ারব্যান্ড' (১৯৯৯)
'কুচ কুচ হোতা হ্যায়' সিনেমায় রানী মুখার্জির মাথায় রাউন্ড ব্যান্ড দিয়ে স্টাইলও হয়ে ওঠে ব্যাপক জনপ্রিয়। তার এই স্টাইল একইসাথে স্ট্রেইট চুল রাখাকেও জনপ্রিয় করে তোলে।
প্রীতি জিনতার 'কোকড়া চুল' (২০০১)
'দিল চাহতা হ্যায়' সিনেমায় প্রীতি জিনতার কোকড়ানো চুলের সৌন্দর্য্য দেখানো হয়েছিল। আর সেটাই হয়ে ওঠে ট্রেন্ড। আয়রন বা অন্যান্য উপায়ে নিজের চুলকেও একই রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেন অনেক নারী। খোলা, কোকড়া চুলে প্রীতি জিনতাকে যে লাস্যময়ী লেগেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
বিশ্বব্যাপী প্রভাব ফেলেছে যেসব হেয়ারস্টাইল:
মনরো বব (১৯৪৭)
অড্রে হেপবার্নের 'পিক্সি কাট' (১৯৫৩)
র্যাচেল গ্রিন হেয়ারকাট (১৯৯৪)