যে কারণে মাইকেল জ্যাকসনের এই তিন সিনেমা ভক্তদের দেখা দরকার
মাইকেল জ্যাকসনকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত পপ স্টার। সার্বিকভাবে কেউই হয়তো এখনো পর্যন্ত তার মতো একযোগে গান রচনা করতে, মঞ্চ মাতাতে কিংবা নাচতে পারেনি। সঙ্গীত পরিবারে জন্ম নিয়ে জ্যাকসন একাই যেন অতি অল্প বয়সে এইসব বহুমুখী গুণ রপ্ত করেছিলেন। গড়েছিলেন স্বপ্নের মতো এক পপ ক্যারিয়ার।
তবে উজ্জ্বল এক ক্যারিয়ারের পাশাপাশি বিতর্কও যেন পিছু ছাড়েনি মাইকেল জ্যাকসনের। এমনকি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতার মাত্র ৫০ বছর বয়সেই মৃত্যুবরণ করেছিলেন তিনি। জানা যায়, খ্যাতিমান এই পপ তারকার ব্যথার ও ঘুমের ওষুধের প্রতি আসক্তি ছিল।
ব্যক্তিগত জীবন যতই অগোছালো হোক না কেন, সঙ্গীত জগতে জ্যাকসন ছিলেন এক মহাতারকা। ক্যারিয়ারজুড়ে বহু গানে তিনি নিজের দক্ষতা ও প্রতিভা প্রদর্শন করেছেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক তাকে নিয়ে নির্মিত কয়েকটি সিনেমা।
মেকিং মাইকেল জ্যাকসন্স 'থ্রিলার' (১৯৮৩)
মাইকেল জ্যাকসনের হিট গানের তালিকায় নিঃসন্দেহে জায়গা করে নিয়েছে 'থ্রিলার'। গানটির মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউয়ের পাশপাশি মিউজিক ভিডিওটিও যেন বেশ বিখ্যাত। সেখানকার একটি শটে তাকে পপকর্ণ খেতে দেখা যায়। যেটি বর্তমানে অনলাইনে মিম আকারে বহুল প্রচারিত। খ্যাতিমান এই পপ তারকার মেধা ও দক্ষতার প্রমাণ হিসেবে প্রায় ৪০ মিনিটের মেকিং মাইকেল জ্যাকসন্স 'থ্রিলার' ভিডিওটি যেন অনন্য এক দলিল। ভিডিওটি এমটিভিতে প্রিমিয়ার করা হয়েছিল এবং মূল মিউজিক ভিডিটির আয়ের আরও সুযোগ করে দিয়েছিল।
জ্যাকসনের ১৫ মিনিটের মিউজিক ভিডিও 'থ্রিলার'কে বলা হয় সর্বকালের সেরা মিউজিক ভিডিও। এটি ছিল এমন এক ভিডিও, যা সংগীত জগত আগে কখনো দেখেনি।
বড় বাজেট, দারুণ সব কস্টিউম, স্পেশাল ইফেক্ট এবং অসাধারণ কোরিওগ্রাফি ও মেকআপ—এই সব মিলিয়ে তৈরি হয়েছিল ভিডিওটি। ওই সময়ে থ্রিলারকে একটা গান নয়, বরং ছোটখাটো চলচ্চিত্রই মনে হয়েছিল! বলা হয়ে থাকে, এই ভিডিওর মাধ্যমে পপ সংস্কৃতি ও সঙ্গীতের জগতে থাকা সব বর্ণবৈষম্যমূলক ধারণাকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন মাইকেল জ্যাকসন।
মাইকেল জ্যাকসন্স দিস ইজ ইট (২০০৯)
মাইকেল জ্যাকসনের কনসার্ট ট্যুরের প্রস্তুতির ক্লিপ নিয়ে ডকুমেন্টরিটি তৈরি করা হয়েছে। যদিও দুর্ভাগ্যবশত ট্যুরটি হওয়ার আগেই তিনি মারা গিয়েছিলেন। তবে সেই ট্যুরটিকে ঘিরে জ্যাকসনের করা রিহার্সাল ও সকল প্রস্তুতির ক্লিপ যেন ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে। ভক্তরা এই চমৎকার ডকুমেন্টরিতে জনপ্রিয় এই পপ তারকার পর্দার আড়ালের নানা ক্লিপ দেখতে পারবেন। যদিও মাইকেল জ্যাকসন যখন মারা যান তখন এই সম্পর্কিত কোনও ফুটেজ প্রকাশ না করার কথাই বলা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সেটি প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দ্য উইজ (১৯৭৮)
'দ্য উইজ' মূলত মিউজিক নিয়ে নির্মিত একটি মার্কিন এডভেঞ্চার ফিল্ম। এতে বিখ্যাত ডায়ানা রস, নিপসে রাসেলসহ বহু কিংবদন্তির মিউজিক জীবন তুলে ধরা হয়েছে। যাতে জায়গা পেয়েছে মাইকেল জ্যাকসনও। এতে তার সাথে প্রডিউসার কুইন্সি জোন্সের পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে। তারা দুজন মিলেই বহু আইকনিক গান ও অ্যালবাম ভক্তদের উপহার দিয়েছেন।
পপ সম্রাট মাইকেল জ্যাকসন সমসাময়িক অন্য শিল্পীদের চাইতে নিজেকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে চেয়েছিলেন। উপস্থাপনায় সৃজনশীলতা, গানের সাথে মনোমুগ্ধকর নাচ, ব্যক্তিগত আদর্শ, জীবনযাপনের ধারা নিয়ে বহুবার আলোচিত-সমালোচিতও হয়েছেন। আলোড়ন তুলেছেন পশ্চিমা সংগীত জগতে। তার সেসব অদ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য আজও তাকে আলাদা করে চেনায়। ২০০৯ সালের ২৫ জুন না ফেরার দেশে পাড়ি দেন পপ সম্রাট। মৃত্যুর এত বছর পরও তিনি সমান জনপ্রিয় ভক্তদের কাছে।