‘কোভিডের সময় প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি’: আল পাচিনো
কয়েক বছর আগেও করোনা ভাইরাস সংক্রমণে বিপর্যস্ত ছিল পুরো বিশ্ববাসী। মহামারিতে প্রাণ হারিয়েছেন লাখো মানুষ। ২০২০ সালে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রায় প্রাণ হারাতে বসেছিলেন অস্কারজয়ী 'গডফাদার' খ্যাত অভিনেতা আল পাচিনোও।
সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক টাইমস ও পিপল ম্যাগাজিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে এমনটা জানান।
৮৪ বছর বয়সী পাচিনো জানান, তিনি হঠাৎ জ্বর ও ডিহাইড্রেশনে (পানিশূণ্যতা) ভুগতে শুরু করেন। "আমি ঘরে বসেছিলাম, এবং মিনিটখানেকের জন্য আমার পালস (হৃৎস্পন্দন) বন্ধ হয়ে যায়", বলেন তিনি।
মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা পাচিনো তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, 'মনে হচ্ছিল বেঁচে আছি, আবার মনে হচ্ছিল না। আমি ভাবলাম: আশ্চর্য তোমার কোনো স্মৃতিও নেই, কিছুই নেই। এটা যেন অদ্ভুত এক জগাখিচুড়ি।"
তবে কয়েক মিনিটের মধ্যেই একটি অ্যাম্বুলেন্স এসে পৌঁছায়, এবং পাচিনোর জ্ঞান ফিরে আসে। তার ঘরে ছয়জন প্যারামেডিক ও দুইজন ডাক্তার উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, তাদের পোশাকগুলো দেখে মনে হয়েছিল যে তারা মহাকাশ বা অন্য কিছু থেকে এসেছেন! সবাই আমাকে ঘিরে রেখেছেন। তারা বলছিলেন, 'তিনি ফিরেছেন। এই তো তিনি এখানে।'
পিপল ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাচিনো জানান, চেতনা ফিরে পাওয়ার পর তিনি বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি বলেন, "আমি চারদিকে তাকালাম এবং ভাবলাম, আমার কী হলো?"
"আমি ভেবেছিলাম, আমি মৃত্যু অনুভব করেছি। হয়ত করিনি। আসলে মনে হয় না করেছি। তবে আমি বেঁচে আছি, এটুকু জানি," পাচিনো বলেন।
পাচিনো তার ব্যক্তিগত সহকারীকেও ধন্যবাদ জানান, যিনি নার্সের কাছ থেকে তার পালস না পাওয়ার খবর শুনে দ্রুত প্যারামেডিকদের খবর দিয়েছিলেন।
এ ঘটনার পর তার জীবনযাত্রায় কোনো পরিবর্তন এনেছে কিনা, জানতে চাইলে পাচিনো পিপল ম্যাগাজিনকে বলেন, "একদমই না"। তবে এর মানে এই নয় যে, এই অভিজ্ঞতা তার জীবনে কোনো প্রভাব ফেলেনি।
বর্তমানে শেক্সপিয়ারের 'কিং লিয়ার' অবলম্বনে নির্মিত সিনেমায় অভিনয়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে পাচিনো নিউ ইয়র্ক টাইমসকে জানান, তার এই অভিজ্ঞতা আধ্যাত্মিকভাবে তার জীবনে প্রভাব ফেলেছে।
তিনি বলেন, "আমি কোনো সাদা আলো দেখিনি। কিছুই ছিল না"। শেক্সপিয়ারের 'হ্যামলেট' এর বিখ্যাত লাইন উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, 'টু বি অর নট টু বি'; 'দ্য আনডিসকভারড কান্ট্রি ফ্রম হু'স বর্ন, নো ট্রাভেলার রিটার্নস।'
পাচিনোর এই অভিজ্ঞতা তার আত্মজীবনী 'সনি বয়'-এ বিস্তারিতভাবে লেখা হয়েছে, যা মঙ্গলবার প্রকাশিত হবে।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন